২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্যে প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্যে সরকারের বরাদ্দ বেড়েছে ৩ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২৯ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা, যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকায়।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিগত বাজেটে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় শেষ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য আমরা বিপুল বরাদ্দ রেখেছিলাম। এছাড়া, যেকোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রেখেছিলাম। তবে প্রথম প্রাদুর্ভাবের পর বছর ঘুরে এলেও বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির ভয়াবহ প্রকোপ এখনও বিদ্যমান রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি বিগত বাজেটের মতো এবারও অঙ্গীকার করছি এ মহামারি মোকাবেলায় যা করণীয় তার সবকিছুই সরকার করে যাবে। সে কারণে আগামী অর্থবছরেও কোভিড-১৯ মোকাবেলায় জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য পুনরায় ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
মুস্তফা কামাল বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি হতে জনজীবনের সুরক্ষার জন্য সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় ন্যাশনাল ডেপলয়মেন্ট অ্যান্ড ভ্যাকসিন প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিটিউট হতে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ডোজ কোভিশিল্ড হয়েছে। এছাড়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটি হতে দেশের জনসংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ, তথা ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষের জন্য ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে, তন্মধ্যে ১.০৬ লাখ ডোজ টিকা ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, চীন ও রাশিয়ার সরকার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও ফ্রান্স/ বেলজিয়ামভিত্তিক সানোফি/জিএসকের কাছ থেকে টিকা ক্রয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। চীন হতে সিনোফার্ম ও রাশিয়া হতে স্পুটনিক ভি টিকা ক্রয় এবং প্রয়োজনে বাংলাদেশেই তা উৎপাদনের লক্ষ্যে আলোচনা বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে অক্সফোর্ডের ৭০ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসে পৌঁছেছে এবং ভারত ও চীন সরকার যথাক্রমে ৩২ লাখ ডোজ ও ৫ লাখ ডোজ এবং ফাইজারের ১ লাখ ৬২০ ডোজ বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে দিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক থেকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও লজিস্টিক সাপোর্টের জন্য ১৪.৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যবহৃত হচ্ছে। ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ৯৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওয়ার লক্ষ্যে ঋণচুক্তি চূড়ান্ত পর্যায় রয়েছে। পাশাপাশি, ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক এবং এআইআইবি থেকে ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য সহায়তা পাওয়া যেতে পারে। মোট ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যে ভাগ ভাগ করে পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগণকে এবং প্রতিমাসে ২৫ লাখ করে টিকা দেওয়া হবে। ইপিআই ও সিডিসি (কমুনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল) এর সমন্বয়ে এ ভ্যাকসিন দেয়ার কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। জাতীয় সংসদ ভবনের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে এ প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : বাজেট স্বাস্থ্যখাত
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh