১ লাখ ১৪ হাজার টাকা ব্যয় হবে ঋণের সুদে

আগামী অর্থবছর ২০২৪-২৫ সালে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ঋণের সুদ মিলিয়ে সরকারকে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এ সুদ মোট বাজেটের ১৪.২৪ শতাংশ। এর মধ্যে দেশী অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদই বেশি।  

আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন)  জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে তিনি এ তথ্য জানান।

প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, আগামী অর্থবছরের জন্য সুদ বাবদ সরকারের ব্যয় হবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে দেশি অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদই বেশি। এর পরিমাণ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশী ঋণের সুদ ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

এদিকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ১১টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে রূপান্তরিত করতে প্রয়োজনীয় সব কার্যক্রমকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ বছরের নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা যে অঙ্গীকার করেছি, সেগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্মক্ষম সবার জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থান, কৃষির উন্নয়ন, বিনিয়োগ ও শিল্পের প্রসার, উপযুক্ত স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অধিকার ইত্যাদি নিশ্চিত করার পাশাপাশি মানুষের জীবনমানের সুরক্ষা প্রদান করা হবে। সর্বোপরি নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক ভিত্তি রচনা হবে আমাদের এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য।

এবারের বাজেটে যেসব বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো-  ১. অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ২. বিজ্ঞান শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবন সহায়ক শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ৩. কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ৪. মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা উন্নত ও সম্প্রসারিতকরণ ৫. তরুণদের প্রশিক্ষণ ও আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ ৬. সম্ভাব্য সব সেবা ডিজিটালাইজ করাসহ সর্বস্তরে প্রযুক্তির ব্যবহার ৭. ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন, সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ ৮. ২০৩১ সালের মধ্যে অতি দারিদ্র্য নির্মূলকরণ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ সাধারণ দারিদ্র্যের হার তিন শতাংশে নামিয়ে আনা ৯. শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগে সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ১০. জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ ১১. জনকল্যাণমুখী, জবাবদিহিতামূলক, দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন গড়ে তোলা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ কমছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি কম ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। তবে, অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়াবে দুই লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছর চার হাজার ৪০০ কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বৈদেশি ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যার ৭২ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং ৬৪ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //