৭ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে বৈদেশিক ঋণ

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশ যে ঋণ নিচ্ছে তা গত সাত বছরের মধ্যে দ্বিগুণ হয়েছে। তাই, বাংলাদেশ এখন যে ঋণ করছে, তার একটি বড় অংশ যাচ্ছে সেই ঋণ পরিশোধের পেছনে।

আগামী অর্থবছরের জন্য সুদ পরিশোধে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ। এর ফলে ৬ বছরে সুদ পরিশোধ ব্যয়ও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গত অর্থবছরের মূল বাজেটে সুদ পরিশোধের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী তার বাজেট বক্তব্যে বলেন, পশ্চিমা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ২০২২ সাল থেকে সুদহার ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়েছে। এতে আমাদের দেশের সুদহারও বাড়াতে হয়েছে। একই সঙ্গে ডলারের বিপরীতে টাকার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কমে গেছ। এ পরিপ্রেক্ষিতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে সুদ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে এখন দুই ধরনের চাপ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে সুদহার বেড়ে যাওয়ায় মূলধন ফেরত নেওয়া বেড়েছে। আবার ডলার আসছে কম। এতে একদিকে আর্থিক হিসাবে ঘাটতি বাড়ছে। আরেকদিকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের দায় বাড়ছে। ২০২২–২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ বাৎসরিক ব্যয় এক বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে সুদহার কমে আসার যে পূর্বাভাস রয়েছে তা সঠিক না হলে এ ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।

গত অর্থবছরের মূল বাজেটে সুদ পরিশোধ ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছিল ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা, যা ছিল মোট বাজেটের ১২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে এক লাখ ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। ২০১৯–২০ অর্থবছরে সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল ৫৮ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। এর মানে ৬ বছরে সুদ পরিশোধ ব্যয় বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আর গত অর্থবছরের বাজেট প্রাক্কলনের তুলনায় এবার ব্যয় বেশি ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ১২৪ কোটি টাকা বা ২০ দশমিক ২৬ শতাংশ।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, দেশি–বিদেশি উৎসে বর্তমানে সরকারের ঋণ রয়েছে ১৮ লাখ কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা ও সঞ্চয়পত্রে ঋণ ৮ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি উৎসে সরকারের ঋণ ছিল ৭ হাজার ৯৬৯ কোটি ডলার। বর্তমান বিনিময় হার ১১৭ টাকা ৯৫ পয়সা অনুযায়ী যা প্রায় ৯ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও সর্বজনীন পেনশন স্কিমসহ বিভিন্ন উৎসে সরকারের ঋণ রয়েছে। আবার ডলারের বিপরীতে টাকার দর অনেক কমে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধে টাকার অংকে সরকারকে বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের ব্যয় বাড়ছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //