ডিএনসিসি ১ জানুয়ারি থেকে অনলাইনে ট্যাক্স নেবে

আগামী ১ জানুয়ারি থেকে অনলাইনে ট্যাক্স নেয়া শুরু করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।

পরীক্ষামূলকভাবে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান (চিরুনি অভিযান) উদ্বোধনকালে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ কথা জানান।

গতকাল মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে ডিএনসিসির অঞ্চল-২ (মিরপুর) ও অঞ্চল-৫ (কাওরান বাজার) এর সব ওয়ার্ডে (১৭টি) পরীক্ষামূলকভাবে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে।

এসময় মেয়র বলেন, চিরুনি অভিযানে আমরা ‘ডোর টু ডোর’ যাবো। এখানে বাসাবাড়ি থাকবে, অফিস-আদালত থাকবে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকবে। এ অভিযানের মাধ্যমে আমরা রাজস্বের পরিধি বাড়াবো, ট্যাক্সের পরিমান বাড়াবো না। সবাই যাতে বাসায় বসে ট্যাক্স দিতে পারে, যেমনটা আমার নির্বাচনি ম্যানিফেস্টো ‘সবাই মিলে সবার ঢাকা’তে ছিল-  আমরা অটোমেশনে যাব।

তিনি বলেন, এ বছর ৪০০ কোটি টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স ও ১০০ কোটি টাকা ট্রেড লাইসেন্স থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে।

আবাসিক এলাকায় স্থাপিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমাদের অনেক আবাসিক এলাকা আছে যেখানে নিচতলায় দোকান করা হয়েছে। এজন্য আগামী সপ্তাহে আমি রাজউককে আমার অফিসে আসতে বলবো। কীভাবে আবাসিক ভবনে ব্যবসা চালানো হচ্ছে? যেহেতু এটা আবাসিক এলাকা আমরা ট্রেড লাইসেন্স দিতে পারি না। আবাসিক এলাকায় সিটি করপোরেশনের ক্ষমতা নেই ট্রেড লাইসেন্স দেয়ার, কিন্তু এখানে ব্যবসা করছে। এটির একটি বিহিত করা দরকার।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে অনেক বড় বড় বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড অবৈধভাবে স্থাপন করা হয়েছে। এগলো সম্পূর্ণ বেআইনি। যারা এ রকম করেছেন তাদেরকে ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে। যারা অবৈধভাবে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড স্থাপন করছে তিনি তাদেরকে এরকম কাজ থেকে বিরত থাকার আহবান জানান।

তিনি আরো বলেন, এ শহর আমাদের সকলের। এখানে ব্যবসা করতে হলে নির্ধারিত হারে ট্যাক্স দিতে হবে। যারা হোল্ডিং ট্যাক্স দিচ্ছেন না, তাদেরকে ট্যাক্সের আওতায় আনার জন্য এ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

উদ্বোধনের পর মেয়র বছিলায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, সুপার শপ, আবাসিক ভবন ইত্যাদি পরিদর্শন করেন। এ সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স না থাকা, সড়কে মালামাল রাখা, অবৈধভাবে বিজ্ঞাপন প্রচার ইত্যাদি অপরাধে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে শাহজালাল বেকারি, সুপারশপ স্বপ্ন, ভিশন ইলেক্ট্রনিক্স, পারটেক্স ফার্নিচার, মির সিরামিক, থাই এলুমিনিয়াম। মোহাম্মদপুরের কাদেরিয়া হাউজিং আবাসিক এলাকার জনৈক ব্যক্তি যথাযথভাবে হোল্ডিং টাক্স পরিশোধ করায় মেয়র তাকে স্যালুট জানান।

আর্থিক স্বনির্ভরতা অর্জন করে নাগরিক সেবা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের দোরগোড়ায় পৌছানোর লক্ষ্যে করের হার না বাড়িয়ে করের পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ডিএনসিসি। এ লক্ষ্যে মাসব্যাপী এ চিরুনি অভিযান চলবে।

ডিএনসিসির অন্যান্য অঞ্চলেও পরবর্তীতে এই চিরুনি অভিযান পরিচালিত হবে। এই চিরুনি অভিযানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে- করের পরিধি বাড়ানো; বাদ পড়া হোল্ডিং বা প্রতিষ্ঠানকে করের আওতাভূক্ত করা; রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রমে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা; রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা; এবং জনসাধারণকে পৌরকর প্রদানে উৎসাহ প্রদান করা।

চিরুনি অভিযানে কর বহির্ভূত বাড়ি-ঘর/স্থাপনাকে এবং নতুন সৃষ্ট ফ্ল্যাট/বাড়ি-ঘর/স্থাপনা করের আওতায় আনা হবে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্সবিহীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা ও আইনসম্মতভাবে ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় আনা হবে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স দ্বারা পরিচালিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা ও নবায়নের আওতায় আনা হবে।

চিরুনি অভিযান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আহ্বায়ক ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। একজন উপকর কর্মকর্তা কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। এই কমিটি কর বহির্ভূত বাড়ি-ঘর ও ট্রেড লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করবে। -বাসস

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //