ফিরে দেখা ২০২০

করোনাভাইরাসের বিষে কুপোকাত অর্থনীতি

বিষে ভরা দুই হাজার বিশ সাল। স্বাস্থ্য ও জীবন বিনাশের সাথে করোনাভাইরাসের বিষ সংক্রমিত হয়েছে অর্থনীতিতেও। সংক্রমণ এড়ানোর চেষ্টায় বিশ্বব্যাপী বন্দিত্ব (লকডাউন) বরণ করা হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত সব ধরনের কর্মকাণ্ড। অর্থনীতি একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। 

মারাত্মক আকার ধারণ না করলেও করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশ। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে। তবে অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকারের চেষ্টা ছিল প্রথম দিক থেকেই।

উৎপাদন, বিপণনসহ ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে সরকার ঘোষণা করে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ। দেয়া হয় নানা নীতি সুবিধাও, যা সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এজন্য অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে ওঠে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারেনি। 

করোনাভাইরাসের ছোবল নিয়ে যাত্রা শুরু ২০২০ সালের। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে মার্চের প্রথম দিকে। দেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে রাষ্ট্রীয়ভাবে নেয়া হয় নানা কর্মসূচি। এসব কর্মসূচির মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নানা বিষয় সংযুক্ত ছিল; কিন্তু করোনাভাইরাস স্বাভাবিক অগ্রযাত্রা থমকে দিয়েছে। সংক্রমণ এড়াতে ২৫ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা ছাড়া সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অচল হয়ে পড়ে। সাধারণ ছুটি প্রত্যাহারের পর পর্যায়ক্রমে কর্মকাণ্ড সচল করা হলেও স্বাভাবিক গতিতে ফিরতে পারেনি অর্থনীতি। এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে।

২০২০ সালে করোনাভাইরাসে ছাড়াও আরো দুটি সংকট গ্রামীণ অর্থনীতিকেও বিপর্যস্ত করেছে। বিদায়ী বছরে স্মরণকালের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা হয়েছে। দেশের ৩৭টি জেলা এতে প্লাবিত হয়। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে অনেক জেলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, ‘সমাজের সব অংশের মানুষের ওপর করোনাভাইরাসের পৃষ্ঠা আঘাত এসেছে। জীবন-জীবিকা, ব্যবসা, উৎপাদন, অর্থনীতি কোনো কিছুই এই আঘাতের বাইরে নয়। তবে এ ক্ষেত্রেও বৈষম্য বেড়েছে দেশের অর্থনীতির কাঠামোগত সমস্যার কারণে। প্রবৃদ্ধি ঘটলেও অর্থনীতির মৌলিক কাঠামো আঘাত সহ্য করার ক্ষমতা খুব নাজুক ছিল, যার ফলে আমাদের দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের ওপর বড় রকম আঘাত এসেছে। এই আঘাত আরও বিস্তৃত হয়েছে, কারণ আমাদের জীবনব্যাপী সব মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নেই।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক খাতের ব্যাপ্তি কম হওয়া, রফতানিতে একক খাতের ওপর বেশি নির্ভরতা, কৃষিতে বহুমুখীকরণের অভাব, প্রণোদনা প্যাকেজ বিতরণে বৈষম্য, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবে মহামারির ধাক্কা বাংলাদেশে বেশি লেগেছে।’

দরিদ্রতা বেড়েছে

ধারাবাহিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দিন দিন কমে আসে। ২০১৯ সাল শেষে দরিদ্রতার হার দাঁড়ায় মাত্র ২০.৫ শতাংশে। ২০১০ সালে যা ছিল ৪৮ শতাংশ; কিন্তু করোনাভাইরাস মানুষের আয়ের পথ বন্ধ করে দেয়। রাজধানীসহ সারাদেশের ছোট ছোট কাজের সুযোগ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। বেসরকারি খাতে চাকরি হারিয়ে মানুষ দরিদ্রতার অন্ধকারে নিপতিত হয়। 

বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনেকেই দরিদ্র হয়ে পড়েছেন। মানুষের আয় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতে, দরিদ্রতার হার বেড়ে হয়েছে ৩৫ শতাংশ। নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন এক কোটি ৭৫ লাখ মানুষ। সানেমের মতে, দরিদ্রতার হার বেড়ে হয়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ। নতুন করে আড়াই থেকে তিন কোটি মানুষ দরিদ্র হয়েছেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এজন্য সরকারও প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছেন; কিন্তু সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা যাদের পাওয়ার কথা তারা যাতে পান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। যারা কাজ হারাচ্ছেন, তাদের আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়াতে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হবে। নতুন সৃষ্ট দরিদ্রতার চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করতে এসব উদ্যোগ জরুরি।

প্রবৃদ্ধি কমেছে

প্রবৃদ্ধির হিসেবে বিশ্বে রোল মডেল বাংলাদেশ। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও এক দশক ধরে ধারাবাহিক উচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত বছর শেষে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮.২০ শতাংশ; কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৫.২৪ শতাংশ। আগের অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৮.১৫ শতাংশ।

যদিও পার্শ্ববর্তী ভারতসহ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ভয়াবহ পতন হয়েছে। সেই তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থা কিছুটা ইতিবাচক। যদিও প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি ছিল; কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণে আমদানি-রফতানিতে ভাটা ও বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা হোঁচট খেয়েছে। 

আমদানি-রফতানি

করোনাভাইরাসে সংক্রমণের পর থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। আমদানি-রফতানি প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। করোনাভাইরাসের তীব্রতা কিছুটা কমলেও কয়েকটি দেশ বাণিজ্য সচল করার উদ্যোগ নেয়; কিন্তু প্রায় অধিকাংশ দেশেই করোনাভাইরাসের আঘাত তীব্র হয়। এতে আমদানি-রফতানি বারবারই বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

মার্চ, এপ্রিল ও মে এই তিন মাসে আমদানিতে ধস নামে। এরপর কিছুটা বাড়লেও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি, অক্টোবরে কমেছে ১৭ শতাংশ। আমদানি ধসের মূল কারণ রফতানির চাহিদা না থাকা। বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেয়া বন্ধ করে দেয় আমদানিকারক দেশগুলো। নভেম্বরে রফতানি আয় বেড়েছে মাত্র ০.৭৫ শতাংশ। 

প্রণোদনা লাখ কোটি টাকা 

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থবিরতা নামার শুরুতেই গত মার্চে সরকার সোয়া লাখ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে।

এর মধ্যে ছিল রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা, বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের জন্য ৪০ হাজার কোটি, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি, নিম্ন আয়ের পেশাজীবী কৃষক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য তিন হাজার কোটি, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সরাসরি নগদ সহায়তার জন্য এক হাজার ২৫৮ কোটি ও ইডিএফ তহবিলের আকার ১২ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি ইত্যাদি। প্রণোদনা তহবিল আরো বাড়ানো হচ্ছে।

নিষ্ক্রিয় বাণিজ্যিক ব্যাংক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে অর্থনীতিকে সক্রিয় করার ভার দেয়া হয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঘাড়ে। এজন্য সরকার প্রায় এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। এপ্রিলের পর থেকে সেটি বিতরণ করছে ব্যাংকগুলো। দু-একটি প্যাকেজ ভালোভাবে বাস্তবায়ন করলেও অধিকাংশের বাস্তবায়নই অনেক কম। আবার নিজস্ব স্বাভাবিক ঋণ প্রদান কার্যক্রম অনেকটাই গুটিয়ে এনেছে ব্যাংকগুলো। এজন্য গত অক্টোবরে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকারের যে উদ্যোগ ছিল, তা সক্রিয়ভাবে বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি ব্যাংকগুলো। অর্থনৈতিক মন্দার কারণে গ্রাহক অর্থ ফেরত দিতে পারবেন কি-না এমন সন্দেহ থেকে ঋণ বিতরণ বন্ধই রেখেছে বেশ কিছু ব্যাংক।

গত বছরের ব্যাংক খাত সম্পর্কে ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, ‘ব্যাংকগুলোর অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে। অতীতে যে সংকট ছিল করোনাভাইরাসের বছরে সেই সংকটের পথেই গেছে ব্যাংকগুলো। যারা ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে ফেরত দেননি, তাদের পকেটেই প্রণোদনার টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। এই টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবার আগের ঋণের টাকাও ফেরত পাচ্ছে না। এক কথায় ব্যাংকগুলো ফোকলা হয়েছে গেছে।’

রেমিট্যান্স ও রিজার্ভে রেকর্ড

করোনাভাইরাসের মধ্যে মার্চ ও এপ্রিলে রেমিট্যান্সে ব্যাপক পতন নামে; কিন্তু এরপর থেকেই বাড়তে থাকে। জুলাইয়ে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। ২০১৯ সালে এক হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। এ বছরের সাড়ে ১১ মাসে তা দুই হাজার ১০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে। রেমিট্যান্সের পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তা এসেছে। রফতানিও হয়েছে স্বল্প পরিসরে; কিন্তু আমদানি ব্যয় হয়নি। এ জন্য রিজার্ভ বেড়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে রিজার্ভ ছিল ৩২ বিলিয়ন ডলার। তা ইতিমধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলার বেড়ে ৪২ ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।

তবে করোনাভাইরাসের মধ্যে রেমিট্যান্স উচ্চ ধারায় থাকলেও নতুন করে শ্রম রফতানি একেবারে বন্ধ। এমনকি যারা ছুটিতে দেশে এসেছিলেন, তারাও বিদেশে যেতে পারছেন না; কিন্তু করোনাভাইরাসে শুরু হওয়ার সময় থেকেই ফেরত আসা অব্যাহত রয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে ৩০ নভেম্বর নাগাদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নানা কারণে তিন লাখ ২৬ হাজার ৭৫৮ জন কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। এর মধ্যে দুই লাখ ৮৭ হাজার ৪৮৪ জন পুরুষ এবং ৩৯ হাজার ২৭৪ জন নারী কর্মী।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাড়ি জমাতে পেরেছেন প্রায় এক লাখ ৯০ হাজার জন, যাদের ৯৬ শতাংশ গেছেন প্রথম তিন মাসে অর্থাৎ করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আগে। এপ্রিল-জুন পর্যন্ত লকডাউনের কারণে একজনকেও পাঠানো যায়নি। জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশে গেছেন মাত্র ৮ হাজার জন।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, এখন উপার্জন বা কাজের টাকা দেশে পাঠাচ্ছেন না প্রবাসীরা। জমানো টাকা যেটুকু ছিল, সেখান থেকেই অথবা অন্য কারও কাছ থেকে ধার করে পরিবারের বিপদের দিনে কিছু পাঠাচ্ছেন। সেটি ফুরিয়ে গেলে আর পাঠাতে পারবেন না। জনশক্তি রফতানির পথ যদি আগের মতো না খোলে, তাহলে দেশের জন্য বড় সংকট যে সামনে তা স্পষ্ট।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //