বিএইচবিএফসির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) ১০ দিনব্যাপী গৃহীত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘২৫ মার্চ নৃশংস গণহত্যা দিবস বিষয়ক’ এক ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত আলোচনায় সভায় বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বিএইচবিএফসির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন বিএইচবিএফসির পরিচালক তপন কুমার ঘোষ। আরো সংযুক্ত ছিলেন বিএইচবিএফসির মহাব্যবস্থাপক, উপ-মহাব্যবস্থাপক। এছাড়া অফিসার কল্যাণ সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গমাতা পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও সদর দফতরসহ মাঠ পর্যায়ের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ যুক্ত ছিলেন।

প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন বক্তব্যের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি আরো স্মরণ করেন ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গণহত্যার শিকার সকল শহীদদের। 

তিনি ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনায় বলেন, বাঙালি জাতিকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেবার উদ্দেশ্যে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বীভৎস হত্যাকাণ্ড শুধু বাংলাদেশের নয় বিশ্বমানবতার ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে আখ্যা করেন। ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ ছিলো বাঙালির একটি প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার এক নারকীয় পরিকল্পনা। এমন গণহত্যা আর কোথাও যাতে না ঘটে সে জন্য তিনি এ দিনটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভের জন্য জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার দাবি জানান।  

তিনি বলেন, জাতির পিতা যে অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত ও উন্নত সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ স্বল্প উন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি লাভ করেছে, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। তিনি গণহত্যার শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করার শপথ নিতে সকলকে আহবান জানান।

বিশেষ অতিথি সম্মানিত পরিচালক তপন কুমার ঘোষ তাঁর বক্তব্যে বলেন, স্বাধীনতা শুধুমাত্র চার অক্ষরের একটি শব্দ নয়; এর পিছনে অনেক ত্যাগ, তিতিক্ষা, সংগ্রাম, অশ্রু ও রক্ত ঝরেছে। 

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার বাহিনী বর্বরতা হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর কোথাও এত কম সময়ে এত বেশি মানুষ হত্যা করা হয়নি মর্মে তিনি বিভিন্ন গবেষকদের কথা তুলে ধরেন। তিনি এ দিবসটি পালনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন শহীদদের আত্মত্যাগ গভীরভাবে স্মরণ করা এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার চেতনা সঞ্চারিত করতে পারলে দিবসটি পালন সার্থক হবে। জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছেন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশ, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম আলোচনার শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকল মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি ২৫ মার্চ কালো রাতকে পৃথিবীর জঘন্যতম ও নিষ্ঠুরতা গণহত্যা হিসেবে আখ্যা করেন। তিনি স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক উত্থাপিত ৬ দফা কিভাবে বাঙালি জাতির প্রাণের দাবীতে পরিণত হয় তা বিশদভাবে তুলে ধরেন। 

তিনি ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান,  ১৯৭০ এর নির্বাচন এবং ১৯৭১ সালে ৭ই মার্চের ভাষণ সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন। এ সময়ে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং বাঙালিদের উপর পাকিস্তানীদের জুলুম, নির্যাতন ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন।  পরাধীন রাষ্ট্রের কষ্ট ও বৈষম্যের কথাও তুলে ধরেন। বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন ছিলো পৃথিবীর বুকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং বঙ্গবন্ধু-ই তাদের প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। এ কারণেই বঙ্গবন্ধুকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বলে আখ্যায়িত করা হয়। 

তিনি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আর্থিক  প্রতিটি সূচকে পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশের এগিয়ে থাকার তথ্য তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রত্যয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই সকলকে যার যার অবস্থান থেকে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা বাস্তবায়নে কাজ করার আহবান জানান।  

ভার্চুয়াল সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএইচবিএফসির মহাব্যবস্থাপক মো. জসীম উদ্দীন, মো. খাইরুল ইসলাম, বিভাগীয় প্রধান আবু বকর সিদ্দিক খান, জোনাল ম্যানেজার মো. ইউসুফ সালাউদ্দিন, শাখা ম্যানেজার নিগার সুলতানা মিতু, অফিসার কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব মো. মাহফুজুর রহমান, বিএইচবিএফসির বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি তারেক ইমতিয়াজ খান এবং বঙ্গমাতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু সাঈদ। সঞ্চালক হিসেবে সভাটি পরিচালনা করেন বিএইচবিএফসির সহকারি মহাব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম ও সিনিয়র অফিসার ফাইজা নোশিন।-বিজ্ঞপ্তি

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //