রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৩ পিএম
আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৪ পিএম
রাজশাহীর
পবা উপজেলার মদনহাটি এলাকায় ‘আমান কোল্ড স্টোর’
নামে এক হিমাগারে প্রায়
আট হাজার তিনশ’ মেট্রিক টন আলু পচে
গেছে। এতে কৃষকের প্রায়
১০ কোটি টাকার ক্ষতি
হয়েছে।
পচে
যাওয়া সব আলু স্টোর থেকে
বের করে বাইরে ফেলে
দিচ্ছে স্টোর কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে গতকাল
বুধবার (২০ এপ্রিল) শতাধিক
কৃষক ও আলু চাষি
স্টোরের সামনে অবস্থান নেন। তারা ক্ষতিপূরণের
দাবিতে সেখানে অবস্থান নেন।
আলু
চাষি ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ,
স্টোরে ঠাণ্ডা থাকার গ্যাসের মেশিন খারাপ থাকার পরেও লাখ লাখ
বস্তা আলু সংরক্ষণ করেছে
ওই হিমাগার প্রতিষ্ঠান। স্বল্প গ্যাসের কারণে আলুগুলো পচে গেছে। প্রায়
নব্বই ভাগ আলু পচে
গেছে। যেগুলো পচতে বাকি আছে,
সেগুলো বিক্রি করতে গেলে বাজারমূল্য
পাওয়া যাবে না।
হিমাগার
কর্তৃপক্ষের হিসাব বলছে, এই হিমাগারে এক
লাখ ৬৬ হাজার বস্তা
আলু আছে। প্রতিটি বস্তায়
আলুর পরিমাণ ৫০ কেজি। বর্তমানে
৫০ কেজি আলুর বস্তার
দাম ৬০০ টাকা। সব
আলু পচে গেলে ক্ষতির
পরিমাণ ৯ কোটি ৯৬
লাখ টাকা দাঁড়াবে।
চাষিদের
দাবি, সব আলুই পচে
গেছে। বস্তায় একটা আলু পচে
যাওয়া মানেই সব আলু নষ্ট
হওয়া। এগুলো আর খাওয়ার উপযোগী
নয়। তীব্র গরমে দুর্বল মেশিন
ঠিকমত গুদাম ঠাণ্ডা রাখতে পারেনি। ফলে আলু পচে
গেছে। এগুলো আর বাজারে বিক্রি
করা যাবে না।
সরেজমিনে
দেখা গেছে, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গুদাম ঘর থেকে আলুর
বস্তা বের করে স্টোরেজের
ভেতরে বাতাস দেওয়ার সময় আলু পচে
যাওয়ার বিষয়টি টের পান কৃষকরা।
পরে তারা ক্ষতিপূরণের দাবিতে
হিমাগারের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
হিমাগার কর্তৃপক্ষ আগামী ১০ দিনের মধ্যে
তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের আশ্বাস দিলে কৃষকেরা শান্ত
হন।
আলু
ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, আমি সাত হাজার
বস্তা আলু রেখেছিলাম। এখন
জানতে পেরেছি, সব আলু পচে
গেছে। ক্ষতিপূরণ না দিলে আমি
পথে বসে যাব।
তিনি
আরো বলেন, মার্চ থেকে নভেম্বর মাস
পর্যন্ত হিমাগারে আলু রাখেন কৃষকেরা।
এজন্য বস্তা প্রতি ২০০ থেকে ২৫০
টাকা ভাড়া দিতে হয়।
আলুর বস্তা বের করার সময়
ওই টাকা দিতে হয়।
রানা
সর্দার নামে এক সবজি
ব্যবসায়ী বলেন, গত বছর আমি
ওই কোল্ড স্টোরেজে আলু রেখেছিলাম। বিক্রি
করার পর ক্রেতারা অভিযোগ
করেন যে, আলুর মান
ভাল না। নষ্ট হয়ে
গেছে। তাই এবার সব
আলু অন্য হিমাগারে রেখেছেন।
শুধু একটা ট্রলি ভুল
করে এ হিমাগারে ঢুকে
পড়েছিল। ওই ট্রলির ৫৭
বস্তা আলু এখানে রাখা
হয়েছিল। এগুলো সব পচে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হিমাগারের ব্যবস্থাপক ফারুক হোসেন বলেন, ‘আলু নানা কারণেই
পচতে পারে। আলুর মান খারাপ
হলেও পচে যায়। কেন
পচেছে তা জানি না।
কি পরিমাণ পচেছে সে হিসাবও করা
হয়নি। আমার মালিক ১০
দিনের সময় নিয়েছে। এটা
একদিনের ব্যবসা না। কীভাবে কি
করা যায় তা দেখছি।’
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh