তেলের দরপতনে স্বস্তির উঁকি

অপরিশোধিত তেলের দরপতন হওয়ায় সবার মাঝেই স্বস্তি দেখা গেছে। এ দরপতন আশা দেখাচ্ছে সংকটে থাকা বিশ্ববাজারকে। 

বর্তমান পরিস্থিতির মতো তেলের দাম এমন নিয়ন্ত্রণে থাকলে দেশের বাজারেও তেলের দাম বাড়ানোর দরকার হবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

এদিকে, পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বিপিসি জ্বালানির দাম বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল। কিন্তু সরকার দাম না বাড়িয়ে সাশ্রয়ের নীতি নিয়েছে।

গতকাল শনিবার (২৩ জুলাই) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমে ব্যারেল ৯৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত ৮ মার্চ সর্বোচ্চ ১১৯ ডলার ৬৫ সেন্টে উঠেছিল তেলের দাম।

আন্তর্জাতিক বাজারে জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে তেলের দাম কিছুটা বাড়ে। এরপর আবার কমতে শুরু করে জুলাইয়ের শুরু থেকেই।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সৌদি আরব সফর তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া, খাদ্য সরবরাহে জাতিসংঘের উপস্থিতিতে তুরস্কের সাথে রাশিয়া ও ইউক্রেনের চুক্তিও নতুন আশা দেখাচ্ছে।

জ্বালানি বিভাগের একাধিক সূত্র বলছে, যেহেতু তেল ব্যবহারে সরকার সাশ্রয়ী নীতি নিয়েছে, তাই দাম বাড়ানোর যে আলোচনা হচ্ছিল তা থেমে গেছে। জনগণ সরকারের সংকট সামাল দিতে নেওয়া উদ্যোগে দারুণ সাড়া দিয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, শুধু রাত ৮টায় দোকান বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ায় দিনে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হচ্ছে।

আপাতত ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ রেখেছে সরকার। গত বছর ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পাঁচ ভাগ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলেছে। চলতি বছর পিডিবি ১৬ ভাগ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চালানো হবে বলে জানিয়েছিল। যদিও এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ১১ ভাগ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে চলবে বলে উল্লেখ করেছিল। এখন সেগুলো একদমই চালানো হচ্ছে না।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি জানিয়েছেন, ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ১০ ভাগ জ্বালানি ব্যবহার করে। সেই হিসাবে বার্ষিক ডিজেলের চাহিদা ৫০ লাখ টন হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পাঁচ লাখ টন ব্যবহার করে।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, জ্বালানি আমদানির বড় সমস্যা- তেল আমদানি করতে বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন হয়। সম্প্রতি তেল আমদানির এলসির জন্য ডলার দিতে চাচ্ছিল না ব্যাংকগুলো। পরে সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমাধান হয়।

বিপিসির কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তারা তেলের দাম বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছিল। কিন্তু এরপর আর এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

বিপিসি সরকারের কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, তাদের প্রতিদিন ১০০ কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় লোকসানের হিসাবেও আসবে পরিবর্তন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //