চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব

ডলারের দাম বেড়ে আমদানি মূল্য বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

একই সঙ্গে আমদানি শুল্ক মওকুফ এবং ব্যাংক রেটে ডলার চেয়েছে সংগঠনটি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার অ্যাসোসিয়েশন এসব কথা জানায়।

সংগঠনটি বলেছে, এই পদক্ষেপগুলো না নেওয়া হলে লোকসানের পরিমাণ বাড়বে, চিনি শোধনাগারগুলোকে দেউলিয়া হওয়ার দিকে ঠেলে দেবে।

এদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমলেও ডলারের দাম বাড়ায় বাংলাদেশের মানুষ তার সুফল ভোগ করছে না।

বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রী আরো জানান, বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিরতার মধ্যে প্রতি লিটারে ভোজ্য তেলের দাম ২০ টাকা বাড়ানোর বিষয়ে মিলারদের প্রস্তাবের বিষয়ে আগামী সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সুগার রিফাইনার অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব গোলাম রহমান বুধবার চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করে বাণিজ্য সচিবকে চিঠি দেন।

চিঠিতে সংস্থাটি বলেছে, চিনি শোধনাগারগুলো বিলম্বিত অর্থ প্রদানের সুবিধা দিয়ে এলসি (লেটার অফ ক্রেডিট) খুললেও এলসি নিষ্পত্তিতে তাদের ডলারের বিপরীতে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়েছে, যার ফলে তারা প্রচুর লোকসান গুনতে হচ্ছে।

এতে বলা হয়, ‘‘অপরিশোধিত চিনি আমদানির জন্য যখন এলসি খোলা হয়েছিল তখন ডলারের রেট ছিল ৮৩-৮৫ টাকা। কিন্তু এখন সেই এলসি নিষ্পত্তির জন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আমাদের প্রতি ডলারে ১১৫ টাকা করে দিতে হচ্ছে। তাই চিনি আমদানিতে বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে।’’

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, আগে প্রতি টন চিনির আমদানি শুল্ক ছিল ২২,০০০-২৩,০০০ টাকা, কিন্তু ডলারের দর বৃদ্ধির কারণে, শোধনকারীদের প্রতি টন আমদানি শুল্ক বাবদ ২৮,০০০-২৯,০০০ টাকা দিতে হচ্ছে, যার ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে।

পরিশোধন করার পর, প্রতি মণ (৪০ কেজি) চিনির দাম দাঁড়ায় ৩৭০৩- ৩৮৮৮ টাকা, তবে পরিশোধকরা তা ২৯০০-২৯২০ টাকায় বিক্রি করছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের আমদানি ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও এ বিবৃতির সঙ্গে একমত হয়েছেন।

চিনির আমদানি মূল্যের ওপর নির্দিষ্ট হারে আমদানি শুল্ক আরোপ করায় চিনি আমদানিকারকদের এখন আগের চেয়ে বেশি শুল্ক দিতে হচ্ছে, যার ফলে চিনির দাম আরো বেড়ে যাচ্ছে।

নিয়ন্ত্রক শুল্ক ছাড়াও চিনি আমদানিকারকদের বিভিন্ন পর্যায়ে শুল্ক, কর এবং ভ্যাট দিতে হয়, চিনি আমদানিতে কর হার ৫১% পর্যন্ত নিয়ে যায়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে চিনির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন টন।

সরকারি চিনিকলগুলো প্রায় ৪৫,০০০ টন উৎপাদন করে, বাকি চাহিদা মেটানো হয় অপরিশোধিত চিনি আমদানির মাধ্যমে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //