ইউরোপে ১৬ শতাংশ পোশাক রপ্তানি বেড়েছে

চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর এ বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি গত বছেরর তুলনায় ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এবং বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, গত পাঁচ মাসে ৯০৭ কোটি ডলার রপ্তানি হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭৮০ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। ইউরোপে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি হয়েছে জার্মানিতে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বরে দেশটিতে ২৭১ কোটি ৮১ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৬৬ কোটি ৮১ লাখ ডলার। ফলে এক বছরের ব্যবধানে জার্মানিতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

এর পরই রয়েছে স্পেনের বাজার। এ দেশটিতে পাঁচ মাসে ১৩৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছ। এক বছরের ব্যবধানে স্পেনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। একই সঙ্গে ফ্রান্সের বাজারেও এ সময়ে রপ্তানি হয়েছে ১১৪ কোটি ৬৭ লাখ ডলারের পোশাক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যান্য দেশ ইতালি, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ৫০ দশমিক ৯৫, ৪৮ দশমিক ৮৭, ৩৪ দশমিক ৩৯ ও ২২ দশমিক ৯০ শতাংশ। অন্যদিকে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে পোল্যান্ডে বছরওয়ারি রপ্তানিতে ১৯ দশমিক ৬১ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

ইউরোপের বাজারের সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও। দেশটিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৩৪৭ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩৩৪ কোটি ২৭ লাখ ডলার। এতে বছর ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ০৭ শতাংশ।

এ ছাড়া যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে ১১ দশমিক ৭১ ও ৩০ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজারেও দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। এ পাঁচ মাসে অপ্রচলিত বাজারে ৩১৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। যা তার আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৪৭ কোটি ১৩ লাখ ডলারের। অপ্রচলিত বাজারের মধ্যে সর্বাধিক পোশাক রপ্তানি হয়েছে জাপানে। দেশটিতে এ পাঁচ মাসে ৫৯ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৮ দশমিক ১১ শতাংশ। অন্যান্য অপ্রচলিত বাজার মালয়েশিয়ায় ১০০ দশমিক ২১, মেক্সিকোয় ৪৯ দশমিক ৬৮, ভারতে ৪৮ দশমিক ৭৮, ব্রাজিলে ৪৪ দশমিক ৫৩ ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩০ দশমিক ৩৫ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রপ্তানি প্রবৃদ্ধির বিষয়ে বিজিএমইএর পরিচালক মো. মহীউদ্দীন রুবেল বলেন, ‘এ পাঁচ মাসের জন্য অর্ডার বেশি ছিল তাই ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কোভিড-পরবর্তীতে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা বেশ ভালোভাবেই চলছিল। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আবারও বাজার কিছুটা মন্দা যাচ্ছে। এর মধ্যেও আমরা ভালো করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। উদ্যোক্তারাও নতুন নতুন বাজার ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ব অর্থনীতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে আমাদের রপ্তানি আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে’

মহীউদ্দীন রুবেল আরও বলেন, ‘কোভিড থেকে প্রতিযোগী দেশ চীন এখনও সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি আমাদের উদ্যোক্তারা নতুন নতুন উৎস তৈরি করে যাচ্ছেন। ক্রেতারা আকৃষ্ট হচ্ছেন এবং সাড়া দিচ্ছেন। উদ্যোক্তারা টেকসই উন্নয়নের দিকে এখন বেশ মনোযোগী যার সুফলও ধারাবাহিকভাবে মিলছে’।


সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //