আবারও বাড়লো পেঁয়াজ-রসুনের দাম, স্বস্তি নেই মসলার বাজারেও

বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশিরভাগ পণ্য উচ্চমূল্যে স্থির হয়ে আছে। নতুন করে পেঁয়াজ, দেশি রসুন ও ডালের দাম বেড়েছে। সুখবর নেই মসলার বাজারেও। অন্যদিকে কিছুটা স্থিতিশীল দেখা গেছে সবজি ও চালের বাজার। অস্বাভাবিক হারে বাড়ার পর দাম কমেছে কাঁচামরিচের। অন্যদিকে কিছুটা স্থিতিশীল দেখা গেছে সবজি ও চালের বাজার। 

দুই মাস যাবত উচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে মসলা জাতীয় প্রায় সব পণ্য। এর মধ্যে নতুন করে কিছুটা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সাত-আট দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। আজ শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাইকারি পর্যায়ে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮২ টাকা কেজিতে । তবে সেগুনবাগিচা ও হাতিরপুল কাঁচা বাজারে খুচরা পর্যায়ে এ পেঁয়াজের দাম উঠেছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। তুলনামূলক সাধারণ মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা ভালো মানের পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং সাধারণ মানের পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুনের কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা রসুনের দামও ২০০ থেকে ২২০ টাকা। আদা, জিরাসহ অন্যান্য মসলার দামও বাড়তি। 

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, গত এক মাসে দেশি পেঁয়াজ ১২ ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া এক মাসের ব্যবধানে দেশি রসুনের দাম বেড়েছে ৬৪ শতাংশ।

বেশ কয়েক মাস স্থির ছিলো মসুর ডালের দাম। তবে তিন-চার দিনের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে। এতে খুচরা বাজারেও কেজিতে পাঁচ টাকার মতো বেড়েছে। সম্প্রতি সয়াবিন তেল ও চিনিতে ৫ টাকা করে কমলেও এখনও পণ্য দুটির উচ্চমূল্যই রয়েছে। চালের বাজারও উচ্চমূল্যে স্থির রয়েছে। গত দুই মাস বাজারে বেশি আধিপত্য দেখিয়েছিল কাঁচামরিচ। আমদানি অব্যাহত থাকায় কাঁচামরিচের দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। 

এদিকে গত ৮ থেকে ১০ দিনে দফায় দফায় বেড়ে ১৭০ টাকায় ওঠে ফার্মের ডিমের ডজন। ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানির হুমকিতে দাম কমেছে পণ্যটির। সাদা ডিমের ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ এবং বাদামি রঙের ডিমের ডজন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

চালের বাজারে খুব বেশি পরিবর্তন নেই। মোটা চালের কেজি ৫০ থেকে ৫২ টাকা, মাঝারি আকারের চাল ৫৪ থেকে ৫৮ এবং চিকন মিনিকেট চালের কেজি ৬৫ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। আগের মতোই সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারে মাছের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও দাম কিছুটা বেশি। মাঝারি আকারের রুই-কাতলার কেজি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৩৪০ থেকে ৪০০ টাকা, আর বড় আকারের রুই-কাতলা ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের কই এবং শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ২৫০ থেকে ২৮০ এবং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। পাঙাশের কেজি ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, মাঝারি আকারের তেলাপিয়া ২৩০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক। বেশির ভাগ সবজির কেজি কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। তবে করলা, গাজরসহ কয়েকটি সবজির দাম ৮০ থেকে ১২০ টাকায় দেখা গেছে।

ভোক্তারা বলছেন, যে কোনো পণ্যের দাম লাফিয়ে বাড়লেও কমে ধীরগতিতে। আবার কমলেও আগের পর্যায়ে নেমে আসে না। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের আয় বাড়ছে না। এ জন্য বাড়তি ব্যয় সামাল দিতে প্রয়োজনের তুলনায় কম কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //