সাগরে ব্লক বরাদ্দ: দরপত্রে অংশ নিতে আমন্ত্রণ পেল যারা

দেশের সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে ২৪টি ব্লক বরাদ্দ দিতে আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। গত ১০ মার্চ সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে সরকারি এ প্রতিষ্ঠান। 

আমন্ত্রণ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস, সৌদি আরবের আরামকো, কুয়েতের কুয়েত অয়েল কোম্পানি, থাইল্যান্ডের পিটিটি এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন পাবলিক কোম্পানি, ভিয়েতনামের পেট্রোভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার পেট্রানিমা, ভারতের অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড, রিলায়েন্স এনার্জি ও ওএনজিসি ভিদেশ লিমিটেড, জাপানের মিৎসুয়ি অয়েল এক্সপ্লোরেশন কো লিমিটেড, নিপ্পন অয়েল, ইনপেক্স ও আডিমিৎস্যু অয়েল অ্যন্ড গ্যাস, বাংলাদেশের ক্রিসএনার্জি লিমিটেড, বাহরাইনের বাহরাইন পেট্রোলিয়াম, কোরিয়ার ডাইউ ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন, পেসকো ও কোরিয়া ন্যাশনাল অয়েল করপোরেশন, চীনের চায়না ন্যাশনাল অফসোর অয়েল কোম্পানি, সিএনপিসি ইন্টারন্যাশনাল ও সিনোপ্যাক, সিঙ্গাপুরের পার্ল এনার্জি,  মেডকো এনার্জি ও প্যাভিলিয়ন এনার্জি এবং আরব আমিরাতের আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল ও মুবাদালা এনার্জি।  

অস্ট্রেলিয়ার কারনারভন এনার্জি, সানতোস, উডসাইড পেট্রোলিয়াম, কালটেক্স অস্ট্রেলিয়া লিমিটেড এবং বিএইচপি বিললিটন। 

সাগরে তেল–গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান সাগরে তেল–গ্যাস অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান 

আমেরিকার শেভরন, শেভরন বাংলাদেশ, কনোকোফিলিপস, অক্সিডেন্টাল পেট্রোলিয়াম, এক্সন মবিল, রেপসল এনার্জি, মারফি এক্সপ্লোরেশন, টালিসম্যান ইউএসএ ও কেনোভাবস এনার্জি, কানাডার সানকোর এনার্জি, ম্যাক্সিকোর পেট্রোলিওস ম্যাক্সিকানোস এবং ব্রাজিলের পেট্রোব্রাজ। 

নরওয়ের ইক্যুইনর, রাশিয়ার গ্যাজপ্রম, নভাটেক ও রসনেফ, যুক্তরাজ্যের হারবার এনার্জি, শেল, সোনাট্রাক, ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম, ফ্রান্সের টোটাল এনার্জি, ইতালির ইনিসপা এবং স্কটল্যান্ডের কাইরন এনার্জি।  

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাকে বিভিন্ন ভাগ করে ২৪টি ব্লক তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানি-আইওসিগুলোর কাছে। এরমধ্যে গভীর সমুদ্রে ১৫টি এবং অগভীর সমুদ্রে ৯টি ব্লক বরাদ্দ দেওয়া হবে। 

বাংলাদেশের বাইরে ১৫ হাজার ব্যারেল বা ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের অভিজ্ঞতা আছে এমন আইওসি পেট্রোবাংলার দরপত্রে অংশ নিতে পারবে।

মডেল উৎপাদন বন্টন চুক্তির (পিএসসি) আওতায় বিদেশি কোম্পানিগুলোকে ব্লক দেওয়া হবে। এ জন্য ২০২৩ সালে মডেল পিএসসির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার। সংশোধিত এ মডেল চুক্তি অনুযায়ী সাগরে গ্যাস পাওয়া গেলে বিশ্ববাজারে তেলের দামের ১০ শতাংশ ধরে সরকার প্রতি ইউনিট গ্যাস কিনবে। যা বিদ্যমান পিএসসিতে যথাক্রমে অগভীর ও গভীর সমুদ্রে ৫ দশমিক ৬ ডলার ও ৭ দশমিক ২৫ ডলার স্থির দর ছিল।

ব্রেন্ট ক্রডের দামের ক্ষেত্রে সারা মাসের দর গড় হিসেবে ধরা হবে। দামের পাশাপাশি সরকারের শেয়ারের অনুপাতও নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। মডেল পিএসসি-২০১৯ অনুযায়ী গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে বাংলাদেশের অনুপাত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আর কমতে থাকবে বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার। 

গভীর সমুদ্রে ৩৫ থেকে ৬০ শতাংশ এবং অগভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের হিস্যা ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত ওঠানামা করবে। তবে ঠিকাদার নির্ধারিত সময়ের দুই বছরের মধ্যে কূপ খনন করে গ্যাস না পেলে কিংবা, বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য না হলে শর্তসাপেক্ষে যথাক্রমে ১ ও ২ শতাংশ হিস্যা বাড়ানোর সুযোগ থাকছে।

এর আগে প্রায় এক যুগ আগে ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বঙ্গোপসাগরে সবশেষ আর্ন্তজাতিক দরপত্র আহবান করেছিল পেট্রোবাংলা। সেই দরপত্রে ৯টি ব্লকের জন্য সাড়া পেলেও তিনটি ব্লক নিয়েছিল আর্ন্তজাতিক তেল কোম্পানি। এর মধ্যে এসএস ৪ এবং ৯ নম্বর ব্লক নিয়েছিল ভারতের ওএনজিসি এবং ১১ নম্বর ব্লক নিয়েছিল সান্তোস। তবে সেই বিডিং বা দরপত্রের কোন ইতিবাচক ফলাফল পায়নি বাংলাদেশ। 

এরপর ২০১৪ সালে সমুদ্র বিজয় হয়েছে। বাংলাদেশ বুঝে পেয়েছে সমুদ্রে বিশাল সীমানা। কিন্তু বাংলাদেশ তেমন কোন উপকার হয়নি। ২০১৪ সালের পর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ গভীর এবং অগভীর সমুদ্রে কোনো তেল গ্যাস পায়নি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //