কার্যকর বিক্রয় কৌশল

বিক্রয়ের ক্ষেত্রে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উৎসবের আমেজ নাকি মহা খরা বিরাজ করছে? উত্তর যদি নেতিবাচক হয় তবে বিষয়টি শুধু আপনার একার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়। সঠিক বিক্রয় কৌশল জানা থাকলে অলাভজনক ব্যবসার ক্ষেত্রেও কিছুটা হলেও ইতিবাচক অবস্থান তৈরি হতে পারে।

আপনাদের জন্য এমন কিছু বিক্রয় কৌশল উপস্থাপন করা হলো- 

লিড জেনারেট 

আপনার পাইপলাইনে পর্যাপ্ত পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত থাকলে সেটিকে সামনে রেখে পদ্ধতিগতভাবে প্রতিষ্ঠানের জন্য লিড জেনারেট করা জরুরি। অনেক উদ্যোক্তা প্রতিদিন না বুঝেই ঝুঁকির মধ্যে জড়িয়ে পড়েন এবং ব্যবসার ভবিষ্যৎ নির্ণয়ে অপরিণামদর্শিতার পরিচয় দিয়ে থাকেন। 

সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

  • লক্ষ্য পূরণে প্রতি সপ্তাহে সম্ভাব্য ক্লায়েন্টদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিশ্চিত করে পরিকল্পনা গ্রহণ  
  • চলমান বিক্রয় প্রকল্পগুলো পরিচালনায় দিনের বাকি সময় ব্যবহার
  • মনে রাখতে হবে লিড তৈরি করা কার্যতালিকার মধ্যে সবচেয়ে সহজ অংশ নয়, বরং আপনি যদি ধারাবাহিকভাবেই ইতিবাচক একটি বিক্রয় কৌশল অবলম্বন করতে চান তবে এটি অপরিহার্য। 

সেলস সাইকেল 

  • আপনার নির্ধারিত সেলস সাইকেলে সম্ভাব্য ক্লায়েন্টের জন্য প্রাথমিক বৈঠক এবং চূড়ান্ত চুক্তির বিষয়সমূহের সঙ্গে সপ্তাহ বা মাসিক পর্যালোচনার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে হবে। 
  • সাম্প্রতিক সময়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া পণ্যের তালিকা তৈরি করুন।

গড় গণনা করুন

  • কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম) প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিক্রয় পাইপলাইনের একটি ভালো চিত্র গবেষণা করে বের করে শীর্ষ ক্লায়েন্টদের শনাক্ত করে নির্দিষ্ট লক্ষ্য ঠিক করা 
  • ফোন নাম্বার সংগ্রহ ও হালনাগাদের ব্যবস্থা নিতে হবে 
  • প্রতি মাসে পণ্য বিক্রয়ের সংখ্যা নির্ধারুণ করুন 
  • সাধারণত দেখা গেছে গড়ে একটি বিক্রয় বন্ধ করতে একজন ক্লায়েন্টের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগের পর থেকে চার মাস সময় লাগে; এ ক্ষেত্রে বিক্রয় কর্মীদের মাধ্যমে যোগাযোগ অব্যাহত রাখুন। দেখা যায় প্রতি ৪ জনের মধ্যে মাত্র একজন শেষ পর্যন্ত পণ্য ক্রয়ে আকৃষ্ট হয়ে থাকেন। 

রেফারেল কাস্টমারের তালিকা সংগ্রহ 

যে কোনো ব্যবসার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হলো সন্তুষ্ট ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে রেফারেল নেওয়া। সরাসরি রেফারেলের জন্য জিজ্ঞাসা করার মতো বিব্রত পরিস্থিতি এড়াতে ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে গ্রাহক এবং সরবরাহকারীদের সম্পর্কে কথা বলতে উৎসাহিত করা জরুরি। পাশাপাশি একটি ফর্মে তাদের কোনো তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। 

অ্যাপয়েন্টমেন্ট সুরক্ষিত করতে মনোযোগী হওয়া 

  • একেবারেই অপরিহার্য না হলে ফোনে বিক্রয়ের পরিবর্তে একটি মিটিংয়ের মাধ্যমে পণ্যের বিস্তারিত বিষয়াদি তুলে ধরাই শ্রেয়। 
  • এমনভাবে আকৃষ্ট করতে হবে, যেন আপনার ক্লায়েন্ট তাদের ক্যালেন্ডারে আপনার পণ্যের বিষয়টিকে মার্ক করে রাখেন। 

নেতিবাচক প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত থাকা 

আমি অন্য কারও সঙ্গে ডিল করছি, আমি খুব ব্যস্ত, এটা ভালো সময় নয়, প্রথমে আমাকে স্যাম্পল পাঠান, পরে কথা বলব ইত্যাদি নানান রকমের নেতিবাচক মন্তব্যে হতাশ হওয়া যাবে না। আপনার স্পষ্ট উত্তরের বিষয়ে কাস্টমার সন্তুষ্ট না হলে আগ্রহ হারাতে পারে। তাই বুঝেশুনে ইতিবাচক পন্থায় কথোপকথনের চেষ্টা করুন। 

ক্লায়েন্টের কথা অনুসরণ এবং মন দিয়ে শুনুন

বিক্রির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ক্লায়েন্টদের সঙ্গে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে দেখাতে হবে যে কেবল ব্যবসায়িক লেনদেন নয় বরং তাদের যে কোনো প্রয়োজনের মুহূর্তে আপনার পরামর্শ বা মতামত দিয়ে ক্লায়েন্টদেরকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে আপনি যত্নশীল। এমনকি ক্লায়েন্টের কোনো মন্তব্য বা পরামর্শ থাকলে তাদের সেসব কথা শুনে যদি কাগজে নোট রাখেন, সে ক্ষেত্রে আপনার বিষয়ে ক্লায়েন্টের ইতিবাচক মনোভাব তৈরির পাশাপাশি বিক্রয় সম্ভাবনাও খুলে যাবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //