আগামী দুই একদিনের মধ্যেই সুদ হার বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা জানান তিনি।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, এখনকার সাড়ে আট শতাংশ থেকে আগামী এক-দু’দিনের মধ্যেই এ হার বাড়িয়ে নয় শতাংশ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে, এবং আগামী মাসগুলোতে সেটি ১০ শতাংশ বা তারও বেশি বাড়ানো হবে।
তিনি বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগামী মাসগুলোতে এই হার ক্রমে বাড়ানো হবে। এটাকে আমরা প্রথমে নয়, তারপর সাড়ে নয়, তারপর দশে নিয়ে যাব। এটা করতে আড়াই মাস সময় লাগবে।
জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে রেমিটেন্স কমে যাওয়া এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পোশাক রপ্তানি খাত বাজেভাবে প্রভাবিত হওয়ায় বাংলাদেশি মুদ্রাও চাপের মধ্যে রয়েছে।
যখন এক যুগের মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে, সাধারণ মানুষের নাজেহাল অবস্থা। ঠিক তখনই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বাড়াতে চলেছে সুদের হার। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদাত হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, বাংলাদেশ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নীতি সুদ হার বাড়াচ্ছিল এবং গত সরকারও বাড়িয়েছিল। কিন্তু তার প্রভাব আমরা অর্থনীতিতে লক্ষ্য করিনি। কারণ, আমরা সংকোচনমূলক অর্থনীতির কথা বলি, কিন্তু বাস্তবে এটি সংকোচনমূলক না। বরং প্রসারণের ব্যবস্থা করে। এজন্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ছিল না।
তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রেণের জন্যেই এমন একটি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। অথচ এটির কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব নাও ফেলতে পারে। তবে যখন গ্লোবাল সুদ হার বেশি হয়, তখন বিদেশি উদ্যোক্তারা আগ্রহী হয় বিনিয়োগ করতে। যার ফলে টাকার মান ধরে রাখা সম্ভব হবে।
এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন কি না, প্রশ্ন করলে তিনি জানান, সুদের হার বেড়ে গেলে পিছিয়ে পড়বেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এর প্রভাব পড়বে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh