নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৪ পিএম
আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৮ পিএম
পোশাক শ্রমিকদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বুধবার থেকে সব গার্মেন্টস খোলা থাকবে বলেও জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সম্প্রতি দেশে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের কারণে শ্রমিক এবং মালিকপক্ষের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
দেশের শিল্পকে বাঁচানোর জন্য বুধবার থেকে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শ্রম উপদেষ্টা বলেন, মালিক-শ্রমিক কোনো পক্ষ ১৮ টি দাবি মেনে নেওয়া বা বাস্তবায়নের বিষয়ে আপত্তি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার উপস্থিত ছিলেন।
শ্রমিকদের দাবিগুলো হলো
১. মজুরি বোর্ড পুনর্গঠন করে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণ করতে হবে।
২. যেসব কারখানায় ২০২৩ সালে সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি, তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
৩. শ্রম আইন সংশোধন করতে হবে।
৪. কোনো শ্রমিকের চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পর চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলে অথবা চাকরিচ্যুত হলে একটি বেসিকের সমান অর্থ দিতে হবে। এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক শ্রম আইনের ২৭ ধারাসহ অন্য ধারাসমূহ সংশোধন করতে হবে।
৫. সব ধরনের বকেয়া মজুরি অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে।
৬. হাজিরা বোনাস (২২৫ টাকা), টিফিন বিল (৫০ টাকা), নাইট বিল (১০০ টাকা) সব কারখানায় সমান হারে বাড়াতে হবে।
৭. সব কারখানায় প্রভিডেন্ট ফান্ড ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৮. বেতনের বিপরীতে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ন্যূনতম ১০ শতাংশ নির্ধারণ করতে হবে।
৯. শ্রমিকদের জন্য রেশনিংব্যবস্থা চালু করতে হবে।
১০. বিজিএমইএ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বায়োমেট্রিক ব্ল্যাকলিস্টিং করা যাবে না, বায়োমেট্রিক তালিকা সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
১১. সব ধরনের হয়রানিমূলক এবং রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
১২. ঝুট ব্যবসার আধিপত্য বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে এ বিষয়ে আইন করতে হবে।
১৩. কলকারখানায় বৈষম্যবিহীন নিয়োগ দিতে হবে।
১৪. জুলাই বিপ্লবে শহিদ এবং আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে।
১৫. রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে তদন্তান্তে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
১৬. শ্রম আইন অনুযায়ী সব কারখানায় ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে।
১৭. অন্যায্যভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে।
১৮. নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ১২০ দিন নির্ধারণ করতে হবে।
গত কয়েকদিন ধরে শিল্পাঞ্চলে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা যেন থামছেই না। আন্দোলন-বিক্ষোভে নিয়মিত বন্ধ থাকছে বহু শিল্পকারখানা।
শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন, মালিকপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টার পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও গত দুদিন ধরে আবার অস্থিরতা শুরু হয় পোশাক কারখানাগুলোতে।
গতকাল সোমবার সাভার-আশুলিয়ায় ৫২ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে হা-মীম, মুসলিম, নাসাসহ বড় শিল্পগ্রুপের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ নিয়ে পোশাক খাতসংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে করে তৈরি পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh