শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষক সমিতির নিন্দা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে  বিবৃতি দিয়েছে।

রবিবার (৩০ আগস্ট) গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো ঐ বিবৃতিতে বলা হয়, "শিক্ষক সমিতি মনে করে, ব্যক্তির দায় ব্যক্তিকেই নিতে হবে।" 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, গত ২৭ আগস্ট আইন অনুষদের ডিন মো. আব্দুল কুদ্দুস মিয়া, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুর রহিম খান এবং আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রাজিউর রহমান শিক্ষক সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগে দাবি করা হয়, সহকারী রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম কর্তৃক ভয়ভীতি প্রদর্শন ও দেখে নেয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের ২৯ আগস্ট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে শিক্ষক সমিতি অনুরোধ জানাচ্ছে। বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি সর্বদা সকল শিক্ষকের অধিকার আদায়ে এবং মর্যাদা রক্ষার্থে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বলেন, "শিক্ষক সমিতি 'দেখে নেওয়ার হুমকি'র ঘটনা নিশ্চিত নয়। কোন প্রমাণ পাননি, তাই কোন ডকুমেন্টও দিতেও পারবে না। তবে কয়েকজন শিক্ষক যেহেতু লিখিতভাবে অবহিত করেছে এবং শিক্ষক সমিতির যেহেতু দায়িত্ব আছে শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করা, তাই শিক্ষক সমিতি ঘটনার তদন্ত দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে।"

তবে এমন ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা অস্বীকার করেছেন সহকারী রেজিস্ট্রার মো. নজরুল ইসলাম। তিনি প্রমাণ ও তদন্ত দাবি করেছেন। উপাচার্যের সাথে পরামর্শ করেই তিনি চোর ধরতে রেস্টুরেন্টে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র প্রবেশের অনুমতি আর সপ্তাখানেক পর চুরির সাথে ঐ ছাত্রের সংশ্লিষ্টতা, এই দুই ঘটনায় কি যোগসূত্র থাকতে পারে? দুটি ঘটনা আলাদা বলে দাবি করেন তিনি। 

অন্যদিকে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের আগে কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটিতে থাকা অভিযোগকারী ঐ শিক্ষককগণ। প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, এ সকল বিষয় নিয়ে আমরা কেউই কোন মন্তব্য করছি না।  

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ছুটি শেষে গত ৯ই আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়। ঐদিন  গ্রন্থাগার থেকে ৪৯টি কম্পিউটার চুরির ঘটনা কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে শুরু হয় নানামুখী জল্পনাকল্পনা ও আলোচনা। এই ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করে ৭ জনকে। যেখানে পনি নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একছাত্র জড়িত ছিলো। ঐ ছাত্রকে ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিলো সহকারী রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম। এর একসপ্তাহ পরেই ২৬ জুলাই চুরির ঘটনাটি ঘটে। চুরির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে সহকারী রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি দেওয়া হলে তিনি কারণ জানতে চান। তখন তাদের মধ্যে যুক্তি চালাচালি হয়। তদন্ত কমিটির ৬ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হলেও, অব্যাহতি সম্পর্কে অবহিত ছিলো না কমিটির সভাপতি ও কমিটি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগকারী আরেক সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা চুরির ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত এবং মূলহোতাকে গ্রেফতার দাবি করে মানববন্ধন করেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //