ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৩১ পিএম
আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৩২ পিএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু রাখার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব কোর্স পরিচালনা পদ্ধতিতে আনা হবে ব্যাপক পরিবর্তন। তবে আগের মতো ঢালাওভাবে সান্ধ্যকালীন কোর্স বা প্রোগ্রাম চালু থাকবে না বলে জানিয়েছে সান্ধ্যকালীন কোর্সের নীতিমালা তৈরির জন্য গঠিত কমিটি।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও নীতিমালা তৈরি কমিটির প্রধান অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাকসুদ কামাল বলেন, ‘বিভিন্ন পেশায় দক্ষতা উন্নয়নের জন্য যেসব কোর্স থাকা দরকার, সেটি জাতীয় বিবেচনায় আমরা অব্যাহত রাখব। কিন্তু আগের মতো ঢালাওভাবে সান্ধ্যকালীন কোর্স বা প্রোগ্রাম চালু না রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এসব কোর্স কোনোভাবেই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিচালনা করা যাবে না। এ কোর্স রাখার উদ্দেশ্য হবে—স্কিলড প্রফেশনাল তৈরি করা। তাই এর প্রচলিত পদ্ধতিতে বড় ধরনের সংস্কার আনতে হবে।’
কী ধরনের পরিবর্তন আনা হবে জানতে চাইলে এ অধ্যাপক বলেন, ‘আগের মতো যেকোনো বিভাগ তাদের ইচ্ছামতো শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না। প্রয়োজনীয়তা ও যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে শিক্ষার্থী আসন নির্ধারণ করা হবে। শিক্ষকদের মধ্যে কারা কতগুলো কোর্স নেবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা থাকবে। এ ছাড়া আয়-ব্যয়ের বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশনা থাকবে।’
২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধের আহ্বান জানান। এর পর এই ধরনের কোর্সের যৌক্তিকতা যাচাইয়ে ডিন পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটি গত বছর সান্ধ্য কোর্স পরিচালন পদ্ধতির বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরে পরিচালনা নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশপূর্বক একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। পাশাপাশি নীতিমালা প্রণয়নের আগ পর্যন্ত সান্ধ্য কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সুপারিশ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সান্ধ্য কোর্স আছে। মাস্টার্স, ডিপ্লোমা, সার্টিফিকেট, ট্রেনিং কোর্সসহ অনিয়মিত এসব কোর্সের সংখ্যা ৬৯। এর মধ্যে ৫১টি মাস্টার্স, চারটি ডিপ্লোমা, সাতটি সার্টিফিকেট আর সাতটি ট্রেনিং কোর্স।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কোর্সের বাইরে ১০৫টি ব্যাচে এসব কোর্সে বছরে ৭ হাজার ৩০২ শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এসব কোর্সের ক্লাস নেন ৭২৫ শিক্ষক।
সবচেয়ে বেশি সান্ধ্য কোর্স আছে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে। এ অনুষদের নয়টি বিভাগের প্রতিটিতেই চালু আছে এই সুযোগ। এসব কোর্সে প্রতি বছর ৪৫টি ব্যাচে ২ হাজার ৯৬৫ শিক্ষার্থী ভর্তি হন। ক্লাস নেন ২৩০ শিক্ষক।
যৌক্তিকতা যাচাই কমিটির প্রতিবেদনেও প্রচলিত পরিচালনা পদ্ধতি সংস্কারে বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়। এ সুপারিশ অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে উত্থাপিত হলে পক্ষে-বিপক্ষে তুমুল বিতর্কে লিপ্ত হন শিক্ষকরা।
এর পর সান্ধ্য কোর্সবিষয়ক যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়নে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই কমিটিতে দুজন উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, সব অনুষদের ডিন ও দুজন ইনস্টিটিউট পরিচালককে সদস্য করা হয়।
কবে নাগাদ নীতিমালার বিষয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে জানতে চাইলে কমিটির প্রধান মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমরা আশা করছি এ মাসের মধ্যেই আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে পারব।’
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সান্ধ্যকালীন কোর্স
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh