চুয়েট আবাসিক হলগুলোর ফি বাড়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) আবাসিক হলগুলোর অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। দফায় দফায় ফি বাড়লেও বাড়েনি হলের খাবারের মান, অবনতি হয়েছে আবাসনের পরিবেশ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনার আগে চুয়েটের হলগুলোতে মাসিক খাবারের মূল্য ছিল ১৬০০ টাকা। তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪০০ টাকায়। তবুও প্রতি বেলায় শিক্ষার্থীদের জুটছে পানসে ডাল ও এক পিস ব্রয়লার মুরগির মাংস।

এদিকে নারী শিক্ষার্থীদের হলগুলোতে উঠে এসেছে আরেক অভিযোগ। হলের ডাইনিংয়ে না খেলেও দিতে হচ্ছে অর্ধেক মাসের ডাইনিং ফি। চট্টগ্রামের স্থানীয় অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত হলে থাকেন না। কিন্তু হলে না খেয়েও তাদের দিতে হয় অর্ধেক ফি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা। 

তারা আরো জানান, ছেলেদের হলের ডাইনিংয়ে না খেলে কোনো টাকা দিতে হয়না। কিন্তু সেক্ষেত্রে মেয়েদের হলে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। হলে সিট আছে মানেই মাসের অর্ধেক ডাইনিং ফি দিতে হবে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী শিক্ষার্থী জানান, আমি কোনো মাসেই হলে থাকিনি, তবে মাঝে মধ্যে ক্লাস, ল্যাবের চাপে চলে থাকতে হয়। কিন্তু কোর্স রেজিস্ট্রেশনের সময় হলের ফি পরিশোধ করতে গিয়ে দেখি এ সেমিস্টারে আমার ৩৯৫৮ টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ করতে হচ্ছে ডাইনিং ফির জন্য। যেখানে আমি কখনো টোকেন তুলিনি, তবুও আমাকে পোহাতে হচ্ছে অর্ধেক মাসের খাবারের বিল।

এ নিয়ে শামসেননাহার খান হলের প্রভোস্ট ড. রাজিয়া সুলতানা জানান, মহিলা হল ও পুরুষ হলগুলোর মধ্যে মহিলা হলের সুযোগ সুবিধা ও খাবারের মান ভালো। যেসব শিক্ষার্থী হলের সিট বরাদ্দ রেখেছে তাদের খাবারের জন্য সব রকমের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। আর তাই তার কাছ থেকে অর্ধেক মাসের খাবারের মূল্য নেয়া হয়। এটি-ই হলের নিয়ম। 

হল ফি এবং ডাইনিং ফি বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে চুয়েট ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম জানান, আমরা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হিসাব পুনরায় যাচাই করে দেখছি। যদি এখানে বেশি টাকা এসে থাকে, তাহলে পরবর্তী হল ফি নির্ধারণ করার সময় ফি কমিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে হিসাব ঠিক আছে। তবে খাবারের মূল্য বৃদ্ধির জন্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, তারেক হুদা হল এবং শহীদ মোহাম্মদ শাহ হলের বেশিরভাগ রুমে নেই কোনো রিডিং রুম এবং ফ্যান। ছাত্রদের নিজ অর্থে লাগিয়ে নিতে হয়েছে ফ্যান। এছাড়াও হলের অধিকাংশ রুমের আলমারি এবং দরজার হাতল ভাঙ্গা। যার ফলে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের মোবাইল, সাইকেল চুরি হয়েছে বেশ কয়েকবার। এ নিয়ে হল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বললে, শিক্ষার্থীদেরকে নিজ দায়িত্বে ঠিক করে নিতে বলা হয়।

এ নিয়ে তারেক হুদা হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ সানাউল রাব্বী জানান, তারেক হুদা হল যেহেতু সবচেয়ে পুরাতন হল তাইর বেশ কিছু আসবাবপত্রসহ দরজায় সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা আমরা সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কিন্তু তাতে আমাদের আরো অনেক সময়ের প্রয়োজন। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা অভিযোগ নিয়ে আসলে আমরা কখনোই তাদের নিজ দায়িত্বে করতে বলে ফিরিয়ে দেইনি, অভিযোগ গ্রহণ করেছি। আর ফ্যান সাধারণত কোনো হলেই কর্তৃপক্ষ থেকে দেওয়া হয় না।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //