জাবিতে প্রক্সি দিতে এসে রাবি ও জবি শিক্ষার্থী আটক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অন্যের হয়ে পরীক্ষা দিতে আসা দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

আজ সোমবার (১৯ জুন) ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে দুটি আলাদা শিফট থেকে দুইজনকে আটক করা হয়।

অভিযুক্তরা হলেন- সোহেল রানা (২৮) ও মোস্তাফিজুর রহমান শাকিল (২৩)। তৃতীয় শিফটের সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা চলাকালে স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে সোহেল ও চতুর্থ শিফটের একই ইউনিটের পরীক্ষা চলাকালে বিজনেস স্টাডিজ কেন্দ্র থেকে মোস্তাফিজুরকে আটক করা হয়।

ধরা পড়ার পর সোহেল রানা নিজেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে দাবি করেন। রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলায় তার বাড়ি। অপরদিকে মোস্তাফিজুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী দাবি করেন। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলায়।

জানা যায়, নাজমুল হক নামে এক ভর্তিচ্ছুর পরীক্ষা দিতে আসেন সোহেল রানা। স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে তৃতীয় শিফটের ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা চলাকালে তাকে দেখে সন্দেহ হলে দায়িত্বরত শিক্ষকরা মা-বাবার নাম জিজ্ঞাসা করেন। এসময় তিনি সঠিকভাবে তার মা-বাবার নাম বলতে পারেননি। এছাড়া প্রবেশ পত্রের ছবির সাথে তার মিল পাওয়া যায়নি। পরে প্রক্টরিয়াল বডিকে খবর দিয়ে এনে তাদের হাতে তুলে দেন কক্ষের দায়িত্বরত শিক্ষকরা।

অপরদিকে মোস্তাফিজুর রহমান মুইন তাজদীদ মাহি নামে এক ভর্তিচ্ছুর পরীক্ষা দিতে আসেন। বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ কেন্দ্রে চতুর্থ শিফটের ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা চলাকালে তাকেও সন্দেহ করেন দায়িত্বরত শিক্ষকরা। এসময় প্রবেশপত্রের ছবির সাথে বাস্তবের মিল না থাকায় দায়িত্বরত শিক্ষকরা প্রক্টরিয়াল বডিকে খবর দেন।

এদিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর দুজনই অন্যের হয়ে পরীক্ষা দিতে আসেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন। এছাড়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দুই অভিযুক্তই বিষয়টি স্বীকার করেন।

অভিযুক্ত সোহেল রানা বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছি। এর আগে কখনো প্রক্সি দেয়নি। এলাকার স্থানীয় বড়ভাই ইমরান ইমনের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে এখানে এসেছি। শুনেছি ইমরান ইমন নাজমুল হকের ফুফাতো ভাই।’

অপর অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান শাকিল বলেন, জামালপুরের হাসানুজ্জামান ও ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের নামের দুই ব্যক্তির মাধ্যম হয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছি। প্রতি ইউনিটের পরীক্ষার জন্য ৪০ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রদান সুদীপ্ত শাহীন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই অভিযুক্তই তাদের দোষের কথা শিকার করেছেন। এদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান তার সাথে থাকা কয়েকজনকে ধরিয়ে দিতে চাইলে আমরা কেন্দ্রে খুঁজতে যাই। তবে সেখানে গিয়ে আর কাউকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারটিও এখন সুইচ অফ দেখাচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে দুজনই পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন। তারা এখন আমাদের জিম্মায় আছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত এসেছেন। অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে তারা অভিযুক্তকে শাস্তি দিবেন।’ 

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //