রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতন দিবস উপলক্ষে ‘প্রতিবাদে, প্রতিরোধে একসাথে লড়ব, বুকের জমিন পেতে প্রিয় স্বদেশ গড়ব’ স্লোগানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪শে আগস্ট) দুপুর ১১টাই শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহীর সাংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন বলেন, বাঙালি জাতি প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে। ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা দেশে নৈরাজ্য প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু এবং তার সপরিবারকে হত্যা করেছে। বিএনপি সরকার বহুমাত্রিক গণতন্ত্রের কথা বলে দেশে তাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সবাই যুদ্ধ করে দেশকে যেমন স্বাধীন করছি ঠিক তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠা করে যাব। রাজাকারদের সাথে বিএনপি জোট মিলিয়ে দেশে বিদেশী শক্তির ভয় দেখাচ্ছে অথচ আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিদেশি কোনো শক্তিকে ভয় পায় না।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, আমেরিকা চাই বিএনপির মতো সন্ত্রাসী দলকে ক্ষমতায় এনে দেশের সেন্টমার্টিন দখল করতে। যার মাধ্যমে দেশে প্রভাব বিস্তার করবে, অথচ আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা ক্ষমতা থাকাকালীন এসব হতে দিবে না। আমরা দেশকে সমস্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে রক্ষা করতে বুকের তাজা রক্ত বারবার দিতে রাজি। বিদেশি রাষ্ট্র দেশের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করলেও আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাবো। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটা স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের মাঝে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, অনেক দুঃসাধ্য পথ পাড়ি দিয়ে আমরা বর্তমান সময়ে এসেছি। ২০০৭ সালের ঘটনা পরিকল্পিত ঘটনা ছিলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারণে ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত সরকারের আক্রমণ শুরু হয়েছে, তাই আমাদের ভাবতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমাদের জন্য ভয়ংকর। এসময় আমাদের উপর নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিলো, আমাদের শিক্ষক, ছাত্র, কর্মচারীদের কারণে আমরা রক্ষা পেয়েছিলাম। আমি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। আমরা সবাই আবার একসাথে হয়ে সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করবো।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- রাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম সায়েদুর রহমান, তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারা নির্যাতনের শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস এবং অধ্যাপক আবদু্ল্লাহ আল ৭, তৎকালীন বাংলা বিভাগের ছাত্র আব্দুর রশিদসহ অনেক ছাত্র স্মৃতিচারণ করেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে ২০ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের সঙ্গে সেনা সদস্যদের সংঘর্ষ বাধে। এসময় অনেক ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। সেসময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮ শিক্ষক ও এক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই দিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত কয়েকশ জন আহত হন। এর পর থেকে প্রতিবছর ২৪ আগস্ট রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতন’ দিবস পালিত হয়।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh