ছাত্রী উত্ত্যক্তের প্রমাণ পেল ববি প্রশাসন, ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ শফিক

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের (ববি) সাবেক শিক্ষার্থী শফিকুর রহমান ওরফে শফিক মুন্সির বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত ও জোরপূর্বক সম্পর্ক স্থাপন চেষ্টার সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির তদন্ত কমিটি ও বিভাগীয় তদন্ত কমিটি। সাবেক এই শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রশাসন। এছাড়াও ছাত্রীর পক্ষে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাশে থাকবে বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

আজ রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে গণমাধ্যমকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কইউম।  

তিনি বলেন, দুইটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমরা সমন্বয় করে একটি প্রতিবেদন উপাচার্য দপ্তরে প্রেরণ করেছি। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে এবং সামনেও করবে। সর্বোপরি আমরা সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

জানা গেছে, প্রক্টরিয়াল বডির তদন্ত কমিটি ও বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সমন্বিত প্রতিবেদনে তিনটি বিষয় সুপারিশ করা হয়েছে। 

সুপারিশগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মো. শফিকুর রহমান (শফিক মুন্সী) বিভিন্নভাবে অভিযুক্ত ওই নারী ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টার বিষয়টি প্রতীয়মান হওয়ায় মো. শফিকুর রহমানকে (শফিক মুন্সী) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। অভিযোগকারী শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে প্রতীয়মান হওয়ায় তার নিরাপত্তার জন্য আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের নিরাপদ শিক্ষাজীবন নিশ্চিত করতে সাবেক শিক্ষার্থী/অছাত্র/বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে/ হলে অবৈধভাবে অবস্থান নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, মিথ্যা সংবাদ প্রচার ও ভয়ভীতি দেখিয়ে এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টার অভিযোগের ভিত্তিতে শফিক মুন্সির বিরুদ্ধে ২৩ জানুয়ারি ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর নিজ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর ভিত্তিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷ এতে বিভাগীয় ও প্রক্টরিয়াল বডির দুটি ভিন্ন ভিন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিভাগীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও প্রক্টরিয়াল বডির সভায় গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এর মাধ্যমে সমন্বিত ফাইনাল রিপোর্ট তদন্ত কমিটি গঠন হতে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরের জন্য বলা হয়েছিল এবং গত ১২ ফেব্রুয়ারি সেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে কিনা এমন প্রশ্নে উপাচার্য অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, আমরা সব সময় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর পাশে আছি। তার নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব। এছাড়াও আইনি পদক্ষেপ নিলে ছাত্রীকে আমরা সহায়তা করব।

জানা যায়, এর আগেও নারী উত্যক্তের ঘটনায় শফিক মুন্সি বরিশালের কোতয়ালি থানায় দুটি মুচলেকা প্রদান করেন। যার মধ্যে ২৫শে ডিসেম্বর ২০২২ সালে প্রথম মুচলেকা এবং এর একবছর পর গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে দ্বিতীয় মুচলেকা দেন। 

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ হলেও শফিক মুন্সী শেরে বাংলা হলের ৪০২১ নং রুম দীর্ঘদিন ধরে দখল করে থাকতেন। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //