এবার রাষ্ট্রপতির কাছে বিচার চাইলেন জবি শিক্ষার্থী মিম

বিচার চেয়ে লিখিতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন যৌন নিপীড়নের শিকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ৩য় ব্যাচের ছাত্রী কাজী ফারজানা মিম।

গতকাল মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাষ্ট্রপতি বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন তিনি। রাষ্ট্রপতি বরাবর মিমের লেখা আবেদনটি তুলে ধরা হলো।

মহামান্য, আমি আপনার সুনামধন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের ৩য় ব্যাচের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে উপাচার্য মহোদয় বরাবর আমার সাথে ঘটে যাওয়া বুলিং ও যৌন নির্যাতনের বিচার চেয়ে একটি আবেদন দায়ের করি। বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয় আমার যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলের দায়িত্বে ছিলেন। এটার বিচার আমি এখনো পাইনি, উল্টো আমাকে যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষক এবং তার সমর্থনে বিভাগের চেয়ারম্যান, অনার্স পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে ফেল করিয়েছেন। অভিযুক্ত শিক্ষকরা আমাকে ভীষণ রকম বহিষ্কার ভয়ভীতি, পরীক্ষার ফেল করানো, অন্যান্য শিক্ষার্থীদের থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন করে মানসিকভাবে নির্যাতন করেন, মৃত্যুহুমকি দিয়েই যাচ্ছেন, আমাকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিচ্ছেন। ফলে আমি নিউজ মিডিয়াতে বিষয়টি প্রকাশ করি।

এমতাবস্থায় মহামান্য আপনার কাছে সর্বশেষ আশা ভরসা নিয়ে আবেদন জানাচ্ছি। আপনার পক্ষ থেকে আমার এই বুলিং ও যৌন নিপীড়নের দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং প্রশাসনের জবাবদিহিতার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি এবং আমাকে ফেল করানো বিষয়গুলো আপনার নির্ধারিত বিশেষ কমিটির মাধ্যমে পুনঃবিবেচনা পূর্বক আমার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে আমার জীবনটাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য আকুল আর্জি জানাচ্ছি।

বিনীত নিবেদক, কাজী ফারজানা মিম।

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পাচ্ছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম ও টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন ও বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী।

এর আগে গত সোমবার (১৮ মার্চ) বিকেলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেওয়ায় হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি পেয়ে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে যান মিম। ওই সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মিম বলেন, ‘আমার বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন আমাকে যৌন হেনস্তা করে। এই অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে বিভাগের চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত শিক্ষক আমাকে সেটি তুলে নিতে নানাভাবে চাপ দিতে থাকে। এতে রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে হাত-পা কেটে হত্যা করাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন। আমাকে এক ঘরে করে দেওয়া হয়। আমাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় শূন্য নম্বর দিয়ে ফেল করানো হয়। অনার্সের ফাইনাল ভাইভায় আমাকে ফেল করানো হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেছেন, ওই ছাত্রীর প্রতিটি বিষয় দেখা হবে। ছাত্রী যাতে পরীক্ষা দিতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।