গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নেবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকে ভর্তি পরীক্ষার প্রক্রিয়া নিয়ে দোটানা শুরু হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টি গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছে নাকি একক পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকরাও।

তবে দুশ্চিন্তা ও নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায়ই বিশ্ববিদ্যালয়টি অংশ নিচ্ছে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ইবিকে গুচ্ছে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও সরকারের নির্দেশনার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সভায় উপস্থিত সদস্যরা জানান। সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান সহ বিভিন্ন অনুষদীয় ডিন ও বিভাগীয় সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। তখন থেকেই নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে শিক্ষকরা এর বিরোধিতা করে আসছিল। শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী ও সাধারণ সভাতেও গুচ্ছে না যাওয়ার পক্ষেই মত প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। এ

মনকি একাডেমিক কাউন্সিলের সভাতেও একক পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তই পাশ হয়। তবে প্রতিবারই ‘সরকারী সিদ্ধান্ত’ দেখিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষকরা গুচ্ছে গেলে ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বলে একট্টা থাকলেও সর্বশেষ অটল থাকতে পারেন না।

একই চিত্র এবছরেও। শিক্ষক সমিতির একাধিক সভায় এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় গুচ্ছের বিপক্ষে একই অবস্থান নেন শিক্ষকরা। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত শিক্ষক সমিতির সভায় একই সিদ্ধান্ত পাশ হয়। তবে সমিরি কার্যনির্বাহী কমিটির ১৫ সদস্যের মধ্যে ছয় শিক্ষক গুচ্ছের পক্ষে মত প্রকাশ করে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতেই আগের সিদ্ধান্তেই অর্থাৎ গুচ্ছে না যাওয়ার পক্ষেই অটল শিক্ষক সমিতি।

তবে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষা কমিটির দ্বিতীয় সভায় বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছেই অংশ নিচ্ছে বলে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম বলেন, সভায় গুচ্ছের পক্ষে-বিপক্ষে কেউ কিছু বলে নাই। 

যেহেতু গুচ্ছে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৫ হাজার ইবিকে কেন্দ্র হিসেবে পছন্দ দিয়েছে। ইবিকে গুচ্ছে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে ইউজিসি ও সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। তাই এখন সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে অংশ নিচ্ছে। তবে শিক্ষকদের কেউ গুচ্ছের পক্ষে ছিল না।

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, সভায় গুচ্ছে যাওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করেনি।

সরকারের সিদ্ধান্তের বাহিরে বিশ্ববিদ্যালয় কোন পদক্ষেপ নিতে পারবে না বলে মনে করেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল মুঈদ। তিনি বলেন, গুচ্ছ প্রক্রিয়াতে পরীক্ষা নেওয়া একটি চমৎকার পদ্ধতি। তবে বিপত্তি বাঁধে ভর্তি হওয়ার সময়। ভর্তি প্রক্রিয়া যদি সহজ করা যায়, তাহলে গুচ্ছ পদ্ধতিটি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, শিক্ষক সমিতি আগের সিদ্ধান্তেই অনড়। তবে যেহেতু প্রশাসন গুচ্ছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে সমিতির সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, বর্তমানে গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে ইউজিসি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম যোগ করেছে। তাছাড়া ১৫ হাজার শিক্ষার্থী ইবিকে পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছে। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের কথা চিন্তা করে ও সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে আমাদের গুচ্ছে অংশ নিতে হচ্ছে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //