কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। উপাচার্য-শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বের জেরে আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

আগামীকাল বুধবার (১ মে) বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ারও নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এমদাদুল হক বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জরুরি সিন্ডিকেট সভায় চলমান পরিস্থিতি সমাধান করতে দুটি কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

আজ মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং আবাসিক হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

পাশাপাশি,পরবর্তীতে আলাপ-আলোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি কমিটি গঠন করা হবে। এর একটি শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে এবং অপরটি ২৮ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়ার ঘটনার তদন্ত কমিটি। 

এদিকে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) তিনটি প্রশাসনিক পদ থেকে একজন প্রাধ্যক্ষ, একজন হাউজ টিউটর, একজন সহকারী প্রক্টর পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর সূত্রে বিষয়টি জানা যায়।

শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সাহেদুর রহমান, নবাব  ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলের হাউজ টিউটর পদ থেকে পদগগ করেছেন ড. মোছাঃ আশিখা আক্তার, প্রক্টরিয়াল বডি থেকে পদত্যাগ করেছে মো:মোশারফ হোসাইন।

সাহেদুর রহমান তার পদত্যাগপত্রে পদত্যাগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন চলমান সংকটে কোন ভূমিকা রাখতে না পারার কথা, আশিখা আক্তার তার পদত্যাগপত্রে  পদত্যাগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন শিক্ষকদের উপর সন্ত্রাসী হামলাকে এবং মোশারফ হোসেন তার পদত্যাগপত্রে পদত্যাগের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সৃষ্ট সংকটে উপাচার্যের কোন প্রকার পদক্ষেপ না নেয়াকে।

উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন নিজ কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠে শিক্ষক সমিতির বিরুদ্ধে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা-কর্মী ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের মধ্যে মারামারি ও উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় পরদিন ২৯ এপ্রিল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে সব প্রকার প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। 

এর আগে শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ এবং হামলায় ‘মদদদানকারী’ ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ, গেস্টহাউস শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য অবমুক্ত করা, পদোন্নতির জন্য আবেদন করা শিক্ষকদের অবিলম্বে পদোন্নতির ব্যবস্থা করাসহ কয়েক দফা দাবি জানিয়ে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। কিন্তু প্রশাসন কয়েকটি দাবি বাস্তবায়ন করে। ফলে শিক্ষকেরা তিন দফায় ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল তিন দপ্তরে তালা দেয় শিক্ষক সমিতি।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //