সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে প্রত্যাহারের দাবিতে এবং কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (১৫ জুলাই) সাড়ে ১২টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও পদযাত্রা করেছে রাবি, রুয়েট, রামেক, রাজশাহী কলেজ ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর সাড়ে বারোটায় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজ ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়। এরপর দুপুর ২টা পর্যন্ত একযোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যান তাঁরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা 'এক দুই তিন চার, মেধাবীরা রাজাকার', 'কে বলছে কে বলছে, সরকার সরকার', 'অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'তুমি নও নও, রাজাকার রাজাকার', চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার', পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ রাখা যাবে না', বাঁধা আসবে যেখানে, লড়াই হবে সেখানে', তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার' ইত্যাদি স্লোগানে আন্দোলন মুখরিত করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এস আর এম ফাহিম রেজা বলেন, শুরু থেকেই আমরা আন্দোলন করে আসছি, বর্তমান বৈষম্যমূলক সকল কোটা বাতিল করতে হবে এবং সর্বসাকুল্যে অনধিক ৫ শতাংশ কোটা রাখতে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে অনেক আদালত আদালত খেলা হয়েছে, আইন আইন খেলা হয়েছে। আমরা পরবর্তীতে দাবি জানিয়েছি আমরা আর আদালতের দিকে তাকাবো না, বিচার বিভাগের দিকে তাকাবো না। আমরা প্রতি জেলা থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান জানিয়েছি, উনি অনতিবিলম্বে সংবিধানের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করে আইনের মাধ্যমে কোটা সংস্কার করবেন। কিন্তু গতকাল প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেই বক্তব্য বাংলাদেশের আপামর ছাত্রজনতা প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা জানিয়ে দিতে চাই অতি দ্রুত আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে আপনার বক্তব্যের জন্য।
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন বলেন, আমাদের আজকের আন্দোলন ২০১৮ সালে শুরু হয়েছিলো। তখন সরকার সরকারি চাকরিতে সকল কোটা প্রথা বাদ দিয়েছিলো। কিন্তু ২০২৪ সালে এসে সরকার আবার একটি অযৌক্তিক কোটার ভোজা মেধাবী ছাত্রদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। আমরা সেই অযৌক্তিক ভোজাটাকে আমাদের মাথা থেকে নামিয়ে দেয়ার জন্যই আন্দোলনে নেমেছি। এই আন্দোলনের জন্য কুমিল্লা, চট্টগ্রামে আমাদের ভাইদের উপর হামলা হয়েছে। কিন্তু এই আন্দোলনের জন্য একটি রাষ্ট্রপ্রধান যখন আমাদেরকে রাজাকার বলে আখ্যা দিয়েছেন। আমরা কি রাজাকার কোটা চেয়েছিলাম। আমরা রাজাকার কোটা চাইনি। আমরা চেয়েছিলাম দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে সরকারি চাকরিতে যেন যৌক্তিকতার ভিত্তিতে মেধাবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh