ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনগণকে সংগঠিত করে রাখা, সদ্যগঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকারের সাথে সহযোগিতা এবং তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা, তদুপরি জনস্বার্থের পক্ষে নীতি নির্ধারণে সহযোগিতার লক্ষ্যে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নাগরিক দায়িত্বের জায়গা থেকে গত শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ ভবনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করেন তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা।
এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দেশের সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে ফ্যাসিস্ট রেজিমের বিরুদ্ধে একটি গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। সহস্রাধিক শহিদ ও আহত ছাত্র-জনতার ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মুক্ত হয়েছি। গণঅভ্যুত্থান এর ভেতর দিয়ে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু, গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষিত লক্ষ্য- ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এবং নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা গঠন এখনো দীর্ঘ রাজনৈতিক ও নীতি নির্ধারণের লড়াই দাবি করে।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং শাসনকাঠামোর বিভিন্ন অংশে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা নানারূপে বিরাজ করছে। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার কুফল এখনো জনগণ প্রত্যক্ষ করছেন। অন্যদিকে, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পূর্বশর্ত হিসাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন, জনস্বার্থের প্রতি সংবেদনশীল নীতি নির্ধারণ, তদুপরি গণহত্যাকারীদের যথাযথ বিচারের ক্ষেত্রেও অগ্রগতির অভাব রয়েছে।’
তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা জানান, ‘গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে আমরা নতুন রাজনৈতিক ভাষা ও জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনা অর্জন করেছি। সে সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপান্তরের জন্যও আমাদের কাজ করে যেতে হবে। যাতে নবগঠিত এ রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হয়।’
সভায় আগত অতিথিদের মতামতের ভিত্তিতে একটি নাগরিক কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই কমিটি গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে রাষ্ট্রের জরুরি সংস্কার ও পুনর্গঠন নিশ্চিত করবে।
সভায় কয়েকটি কর্মপন্থা আলোচিত হয়-
১. গণঅভ্যুত্থানের শহিদ ও আহতদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে বাঁচিয়ে রাখা।
২. মহানগর, জেলা, উপজেলা পর্যন্ত কমিটির বিস্তৃতি সাধনের জন্য কাজ করা।
৩.দেশের সর্বস্তরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্বকে সমন্বিত উপায়ে সংহত করা।
৪. গণঅভ্যুত্থানের অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণের জায়গায় পর্যালোচনা ও প্রস্তাবনা তৈরির কাজ করা।
৫. গণপরিষদ গঠন করে নতুন সংবিধান তৈরির জন্য গণআলোচনার আয়োজন করা।
তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন- আসাদুজ্জামান (গবেষক), মামুন আব্দুল্লাহি (গবেষক), এরশাদুল বারী খন্দকার (আইনজীবী), সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ (গবেষক), মনিকা ইয়াসমিন (এক্টিভিস্ট), ফয়সাল মাহমুদ শান্ত (শিক্ষক ও এক্টিভিস্ট), সারোয়ার তুষার (গবেষক ও লেখক), আতাউল্লাহ (সংগঠক) , আলাউদ্দীন মোহাম্মদ (শিক্ষক, গবেষক ও সংগঠক), আসিফ ত্বাসীন (সাংবাদিক), জাইমা ইসলাম (সাংবাদিক), মুশফিক উস সালেহীন (এক্টিভিস্ট), সামান্তা শারমিন (ভাস্কর), শ্রবণা শফিক দীপ্তি (নৃবিজ্ঞানী এবং গবেষক), সানজিদা ইসলাম তুলি (সংগঠক-মায়ের ডাক), এ. এস. এম সুজা উদ্দিন (সাংবাদিক ও নীতি বিশ্লেষক), তুহিন খান (লেখক) নাহিদা সারোয়ার নিভা (সংগঠক), আব্দুল্লাহ আল আমিন (আইনজীবী), মু. নিজাম উদ্দিন (চিন্তক ও সংগঠক), সায়ক চাকমা (আইনজীবী ও এক্টিভিস্ট), নুসরাত জাহান কেয়া (চার্টাড একাউন্টেন্ট স্টুডেন্ট), সৈয়দ তানভির মুত্তাকি (বেসরকারী চাকুরিজীবী), সাইয়েদ আবদুল্লাহ (ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্ট এন্ড একটিভিস্ট), মুহাম্মাদ মিরাজ মিয়া- রাজনীতি বিশেষজ্ঞ, মুতাসিম বিল্লাহ- (ইয়ুথ একটিভিস্ট এবং উন্নয়নকর্মী), আশরাফ মাহদি (শিক্ষক, একটিভিস্ট), আরীফুল ইসলাম আদীব (সাংবাদিক ও সংগঠক), মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী (রাজনীতিবিদ এবং সংগঠক), আখতার হোসেন (একটিভিস্ট), মাহফুজ আলম (চিন্তক ও গবেষক), জাবেদ রাসিন (লেখক ও রাজনীতিবিদ), তাসনীম জারা (চিকিৎসক), নিশাত ফারজানা (সংবাদকর্মী ও সমাজকর্মী), আকরাম হুসাইন (ব্যবসায়ী ও একটিভিস্ট)।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আওয়ামী লীগ সরকারের পতন অন্তবর্তীকালীন সরকার জনস্বার্থের পক্ষে নীতি নির্ধারণ নাগরিক কমিটি গঠন গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh