রাতভর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাস ও মাইক্রোবাসভর্তি লোক এসে ভরে গিয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। পরে তাদের সরিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা।
বাস ও মাইক্রোবাসে আসা এসব ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বিনা সুদে এক লাখ টাকা ঋণ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তাদের ঢাকায় আনা হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি চক্র অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে তাদের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় এনেছেন। এ অবস্থায় আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) ভোররাত থেকে ক্যাম্পাস ও শাহবাগ এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন শিক্ষার্থী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।
ইতোমধ্যে ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং এ ঘটনার হোতা সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে। রাতভর বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন ও গাড়িগুলো আজ সকাল সাড়ে ৮টার পর ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে দেন শিক্ষার্থী, প্রক্টরিয়াল বডি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও থানার কিছু ক্লিয়ারেন্সসহ বিভিন্ন ধরনের কাগজ জব্দ করা হয়েছে। তবে সেগুলো নকল বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘তাদেরকে ঋণ দেওয়ার প্রলোভনে ষড়যন্ত্র করে ক্যাম্পাসে জড়ো করা হয়েছিল। পরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে চারজনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য এ পরিকল্পনা করা হয়েছে।’
ঢাকায় আসা ব্যক্তি ও ক্যাম্পাস থেকে জানা গেছে, এনজিও সংস্থার পরিচয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু ব্যক্তি মানুষকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দেন। তারা বলেছেন, ঢাকায় গেলে বিনা সুদে ১ থেকে ১০ লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়া হবে। অনেকের কাছ থেকে এ জন্য এক হাজার টাকা করেও নিয়েছে। এ আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তারা গাড়িতে করে ঢাকায় এসেছেন।
এসব গাড়ির একটি ব্যানারে লেখা দেখা গেছে, ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’। লুণ্ঠিত অর্থ ফেরত এনে তাদের ঋণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তারা শাহবাগ মোড়ে সমাবেশে অংশ নিতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন।
এরমধ্যে কিছু গাড়ি ঢাকা ও আরে আশপাশের এলাকা থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু গাড়ি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চলে আসে। সেগুলোর কয়েকটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের সঙ্গে কথা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এমন রহস্যজনক কর্মকাণ্ড নিয়ে রাত থেকেই তোলপাড় চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রীক বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, মধ্যরাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাস ও মাইক্রোবাস ভর্তি অপরিচিত মানুষ দেখা যাচ্ছে। তাদের কর্মকাণ্ড রহস্যজনক। এরপরই অনেকে হল থেকে রাজু ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন স্থানে সতর্ক অবস্থান নেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh