বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও সরকারী কর্ম কমিশনে (পিএসসি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদস্য নিয়োগ না দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
কর্মসূচি থেকে ইউজিসিতে কমপক্ষে একজন এবং পিএসসিতে দুইজন সদস্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। অবিলম্বে দাবি মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পিএসসি এবং ইউজিসি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠান। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে কোন প্রতিনিধি নিয়োগ না দেওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক এবং রাষ্ট্রের জন্য বৈষম্যমূলক। অবিলম্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউজিসি এবং পিএসসিতে প্রতিনিধি নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে শিক্ষার্থীরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির সমন্বয়ক ও স্টুডেন্টস রাইটস এসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী সজীব বলেন, নতুন বাংলাদেশে আমরা স্বপ্নের কথা বলি। তবে নতুন বাংলাদেশে বৈষম্য দূর করতে পেরেছি কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক যে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে তা যদি আমরা উৎপাটন না করতে পারি তাহলে কোনোদিন বৈষম্য দূর হবে না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পিএসসি এবং ইউজিসি হচ্ছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠান। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোন প্রতিনিধি নিয়োগ না দেওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং রাষ্ট্রের জন্য তা বৈষম্যমূলক।
কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে মেহেদী সজীব আরো বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শুধু আন্দোলন সংগ্রাম নয়, গবেষণার দিক থেকেও একটি অন্যরকম ভূমিকা রেখে চলছে। সেই জায়গা থেকে আজকে আমাদের এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে ঘোষণা দিতে চাই অবিলম্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউজিসিতে সর্বনিম্ন একজন এবং পিএসসিতে দুইজন প্রতিনিধি নিয়োগ করতে হবে। আমাদের এই দাবি যদি অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মেনে না নেয়, সেক্ষেত্রে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে শিক্ষার্থীরা যেকোনো কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। প্রয়োজনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করতে আমরা কুণ্ঠাবোধ করব না। আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে বাংলাদেশে প্রতিনিধিত্ব করার স্বার্থে যেকোনো কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, পূর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউজিসি ও পিএসসিতে অন্তত একজন করে সদস্য রাখা হতো। তবে এই গণবিপ্লবের পরে নবগঠিত সরকার কর্তৃক গঠিত ইউজিসি ও পিএসসিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে একজনও প্রতিনিধি রাখা হয়নি। শিক্ষা সংক্রান্ত সকল বাজেট ইউজিসি থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যায়। তারপর সেখান থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যায়। ফলে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে ইউজিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেখানে আমাদের প্রতিনিধি থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বাড়ানোর প্রচেষ্টা করতে পারতেন। তবে দুঃখজনকভাবে সেখানে আমাদের একজন প্রতিনিধি ও নেই।
মানববন্ধনটি সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাবির সমন্বয়ক এফ. আর. এম. ফাহিম রেজা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh