পুঁজিবাজারে দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন

টানা দরপতন আর লেনদেনের নিম্নমুখী প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। পতন থেকে বেরিয়ে সূচকের যেমন ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলছে, তেমনি বেড়েছে লেনদেনের গতি।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেড় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের দেখা মিলেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের মধ্যে সূচক ঊর্ধ্বমুখী রাখতে বড় ভূমিকা পালন করেছে ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং কোম্পানি এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যান্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমলেও, এই দুই খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতেই সূচক ঊর্ধ্বমুখী থেকে শেষ হয়েছে লেনদেন।

এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কমেছে। সেই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। তবে এ বাজারটিতেও লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের প্রথম আধাঘণ্টা অব্যাহত থাকে। এরপর সূচকের বেশ অস্থিরতা দেখা যায়। আর বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে টানা নিচের দিকে নামতে থাকে সূচক। এতে এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ২৩ পয়েন্ট কমে যায়।

এ পরিস্থিতিতে আবার পতনের আশঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তবে লেনদেনের শেষ ৮ মিনিটে বড় ধরনের চমক দেখা যায়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম এই সময়ে যায় বেড়ে। এমনকি দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমাও স্পর্শ করে একাধিক কোম্পানি। এতেই সবকটি মূল্যসূচক বেড়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৩টির। আর ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে আর্থিক খাতের ১১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ৪টির এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ১০টির।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৭৫৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৪৭৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১১৪ কোটি ৯৫ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮০১ কোটি ৩২ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩১৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায় বাড়েনি, গত ১৬ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ১ হাজার ২১৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এরপর গত দেড় মাসে ডিএসইতে আর ১২’শ কোটি টাকার লেনদেনের দেখা মেলেনি।

লেনদেন বাড়ার দিনে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩৮ কোটি ৬০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালী পেপারের ১০২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬৯ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জিনেক্স ইনফোসিস।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বেক্সিমকো, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ফু-ওয়াং ফুড, ইয়াকিন পলিমার, বিকন ফার্মা, কাট্টালী টেক্সটাইল এবং বিডিকম অনলাইন।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩০৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৯টির এবং ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //