উপমহাদেশের অন্যান্য মুদ্রার
মতো ভারতীয় মুদ্রা রুপিরও দরপতন চলছেই। শুক্রবার বাজার খুলতেই এক ডলারের নিরিখে রুপির
দাম দাঁড়াল সর্বনিম্ন। ৫ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে এখন এক ডলারের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ১১
রুপি, যা সর্বকালের রেকর্ড। খবর সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের।
আজ শুক্রবার (১ জুলাই) সকালে
পতন হয়েছে ভারতের শেয়ারবাজারেরও। বাজার খোলার পর ৩৯৯ দশমিক ৬৯ সূচক পড়ে সেনসেক্স দাঁড়ায়
৫২ হাজার ৬১৯ দশমিক ২৫-এ। নিফটি ১৩০ দশমিক ২৫ পয়েন্ট পড়ে গিয়ে হয় ১৫ হাজার ৬৫০।
শুক্রবার সকালে রুপির দরপতন
অব্যাহত থাকার ফলে চলতি অর্থবছরে ডলারের তুলনায় রুপির দাম প্রায় ৬ শতাংশ অবমূল্যায়িত
হলো। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির জেরেই কি বাড়তি চাপে রুপি, এমন প্রশ্নের জবাবে
অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রুপির দাম এমন পতনের অন্যতম কারণ, ভারতের ইক্যুইটি
বাজার থেকে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বা এফআইআইয়ের মূলধন তুলে নেওয়া এবং
অতি অবশ্যই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের মূল্যবৃদ্ধি।
এদিকে দ্য ইউএস ডলার ইনডেক্স
অনুযায়ী, ২০ বছরের মধ্যে ডলারের মান এখন সবচেয়ে বেশি।
বিশ্লেষকদের মতে, এমুহূর্তে
ডলারের সাপেক্ষে অন্যান্য মুদ্রার দামের পতনের বহুবিধ কারণ থাকলেও প্রধান কারণ দুটি।
এক, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে পেট্রোলিয়াম থেকে রকমারি পণ্য—সবকিছুরই দাম বেড়েছে। অর্থাৎ ডলারের অঙ্কে সেই পণ্যগুলোর
দাম বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আমদানির পরিমাণ অন্তত স্বল্প মেয়াদে কমানো অসম্ভব, ফলে আমদানি
ব্যয় বেড়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সব দেশেরই।
তাতে ডলার মূল্যবান হয়েছে,
উল্টো দিকে স্থানীয় মুদ্রার দাম পড়েছে। দ্বিতীয় কারণটি হলো, আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ
সুদের হার বাড়িয়েছে। সারা পৃথিবীতে আর্থিক ক্ষেত্রে তুমুল অনিশ্চয়তা চলছে—এঅবস্থায় বিনিয়োগকারীরা স্বাভাবিকভাবেই নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান
করছেন। সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন ডলার সে দেশেই জমা রাখা লাভজনক, নিরাপদ। ফলে
ভারতের মতো বাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নেওয়ার চল শুরু হয়েছে। অন্যান্য দেশ থেকেও বিনিয়োগ
প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে। ফলে গোটা এশিয়াতেই স্থানীয় মুদ্রা এখন দুর্বল—চীনের ইউয়ান, জাপানের ইয়েন—সব কটিরই পতন ঘটছে।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
বিষয় : ভারতীয় মুদ্রা রুপি দরপতন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh