এএসপি হত্যা: মাইন্ড এইডের পরিচালকসহ গ্রেফতার আরো ২

রাজধানী আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে কর্মচারীদের মারধরে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আরো দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন- মাইন্ড এইড হাসপাতালের পরিচালক ও কথিত মনো চিকিৎসক ফাতেমা খাতুন এবং চিকিৎসক নিয়াজ।

বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ।

তিনি জানান, রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে চিকিৎসার নামে মারধরে পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুল করিম শিপনকে হত্যা করা হয়েছে। উদ্ধার করা ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার পর এটা সুস্পষ্ট হত্যাকাণ্ড বলেই প্রতীয়মান হয়েছে। ওই ঘটনায় বাবার দায়ের করা হত্যা মামলায় সর্বশেষ দুজনকে গ্রেফতার করা হলো। এ নিয়ে মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ গ্রেফতার দুজনকে আগামীকাল আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গত সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে ৩১তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের সদস্য মো. আনিসুল করিম শিপনকে (৩৫) চিকিৎসা করানোর জন্য তার পরিবাবের সদস্যরা আদাবর থানাধীন বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটির ২ নং সড়কের ২৮১ নং বাড়িতে অবস্থিত Mind Aid Psychiatry & De Addiction Hospinal-এ নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, হাসপাতালে যাওয়ার পর আনিসুল করিম হাসপাতালের একটি রুমে নাস্তা করেন। কিছুক্ষণ পর তিনি ওয়াশরুমে যেতে চাইলে ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয় আনিসুল করিমকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে হাসপাতালের দোতলায় নিয়ে যান।আনুমানিক ১২টার দিকে আসামি আরিফ মাহমুদ জয় নিচে এসে তার বোন উম্মে সালমাকে উপরে যাওয়ার জন্য ডাক দেন। তার বোনসহ পরিবারের লোকজন উপরে গিয়ে আনিসুল করিমকে একটি রুমের ফ্লোরে নিস্তেজ অবস্থায় শোয়া দেখতে পান। তার পরিবারের সদস্যরা একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে আনিসুল করিমকে দ্রুত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে আনিসুল করিমকে দুপুর ১২টা ৫৮ মিনিটে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় আনিসুল করিমের পিতা বাদী হয়ে আদাবর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ডিসি হারুন বলেন, হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে আসামিরা আনিসুল করিমকে হাসপাতালের দোতলার একটি রুমে মারতে মারতে ঢুকায়। তাকে রুমের ফ্লোরে জোরপূর্বক উপুড় করে ৩/৪ জন হাঁটুদ্বারা পিঠের উপর চেপে বসে, কয়েকজন পিঠমোড়া করে ওড়না দিয়ে তার দুই হাত বাঁধে। কয়েকজন আসামি কনুই দিয়ে ঘাড়ের পেছনে ও মাথায় আঘাত করে। একজন মাথার উপরে চেপে বসে এবং আসামিরা সকলে মিলে পিঠ, ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মেরে আঘাত করে। ফলে আনিসুল করিম নিস্তেজ হয়ে পড়েন। পরিকল্পিতভাবে মারপিট করে আনিসুল করিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

হত্যায় জড়িতদের পরিচয় তুলে ধরে ডিসি হারুন বলেন, মারধরের জড়িতরা হলেন- আরিফ মাহমুদ জয় (৩৫)‌ হাসপাতালে মার্কেটিং ম্যানেজার, রেদোয়ান সাব্বির (২৩) কো-অর্ডিনেটর, মো. মাসুদ (৩৭) কিচেন সেফ, জোবায়ের হোসেন (১৯), ওয়ার্ড বয়, তানভীর হাসান (১৮) ফার্মাসিস্ট, তানিফ মোল্লা (২০) ওয়ার্ড বয়, সজীব চৌধুরী (২০)‌ ওয়ার্ড বয়, অসীম চন্দ্র পাল (২৪) ওয়ার্ড বয়, লিটন আহাম্মদ (১৮), ওয়ার্ড বয়, সাইফুল ইসলাম পলাশ (৩৫)।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //