উত্তরা দুর্ঘটনায় যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন সড়ক সচিব

উত্তরায় গার্ডার দুর্ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির বিষয়টি উঠে এসেছে। তাই ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে ছিটকে প্রাইভেটকারে গার্ডার পড়ার ঘটনায় আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, ছুটির দিনে ঠিকাদারের কাজ করার কথা না। তারা কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নিয়েই কাজ করছিল। এভাবে উন্মুক্ত রেখে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। নিয়মানুযায়ী কাজ করতে হলে আগের দিন তারা একটি ওয়ার্ক প্ল্যান দেবে, তাদের কতজন লোক থাকবে, কতগুলো ক্রেন লাগানো হবে, পুলিশকে জানাবে। গতকাল ঠিকাদার এগুলো না করেই কাজটা করেছে। কোনো অবস্থাতেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে এ ধরনের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই।

ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে জানতে চাইলে সড়ক সচিব আমিন উল্লাহ বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চুক্তি অনুযায়ী আমরা আমাদের চুক্তিতে যেমন থাকে জরিমানা করা হয়, কাজ টার্মিনেট করা হয় এবং তারা যেন আর কোনো কাজ করতে না পারে এজন্য ব্ল্যাকলিস্ট করা হয়। চূড়ান্ত রিপোর্টটা আসুক। আমি আজকেই চিঠি ইস্যু করবো, তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এত বড় ক্ষতির জন্য শুধু জরিমানা করা যাবে না। সর্বোচ্চ ব্যবস্থা যদি নেওয়া হয় তার লাইসেন্স চলে যাবে। বাংলাদেশে তারা আর কোনো কাজ করতে পারবে না।

এ ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেন তিনি। সচিব বলেন, আগে যারা নিরাপত্তায় ছিল তাদের আমরা টার্মিনেট করেছি। আমি যতটুকু জেনেছি আগের ঘটনাগুলোতে যারা গাফিলতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ দায় এড়াতে পারে না। একদিনে একটি তদন্ত হয় না। গতকাল ঘটনার পরপরই কিন্তু আমি সবাইকে ফোন করেছি। কোনো অবস্থাতেই অরক্ষিত অবস্থায় কাজ করার সুযোগ নেই। ঠিকাদার কেন করেছে সেটাই হলো প্রশ্ন। কেন সে করলো? কমকর্তা যারা মনিটরিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, যে ক্রেনে তোলা হয়েছিল সেটি এর জন্য সক্ষম কি না, এটা তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিলে জানা যাবে। এটা কিন্তু সে উপরে তুলছিল না, এটা স্থানান্তর করছিল। একটা সে সরিয়েছেও। নিয়মিত মামলা হয়েছে। আমরা লাশগুলো আজকে পাঠানোর ব্যবস্থা করছি। সেসময় অন্য কোনো অপারেটর ছিল না।

সড়ক সচিব বলেন, একটা অস্ট্রেলিয়ান প্রতিষ্ঠান কনসালটেন্ট। এ ধরনের কাজের ক্ষেত্রে কনসালটেন্ট থাকে কাজ বুঝিয়ে দিতে, তারা একটি ম্যাথডলজি দেয় কীভাবে করতে হবে। দেওয়ার পরে ফেল করলে এক কথা। তারপরেও কনসালটেন্টকে বলেছি তোমার খোঁজ নেওয়ার কথা। সে বলেছে, বন্ধের দিন তো কাজ করার কথা না।

‘কালকে কাজ বন্ধ ছিল। যারা দায়িত্বে অবহেলা করেছে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের যারা সুপারভাইজার সেখানে ছিল আজকেই তাদের সবাইকে শোকজ করবো। কমিটি আমাকে আগামী ২ দিনের মধ্যে রিপোর্টটা দেবে।

তিনি বলেন, ঠিকাদার কেন করলো। চূড়ান্ত রিপোর্টটা আসুক। এখানে কার কার গাফিলতি ছিল, কাউকে মাফ করার কোনো সুযোগ নেই। যে দায়ী হবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার (ঠিকাদার) কাছে আমি এখন লিখিত সিকিউরিটি কমপ্লায়েন্স চাইবো। সেটি কনসালটেন্ট অনুমোদন করবে তারপর কাজ চালু হবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //