অবসরে যাচ্ছেন শফিকুল, কে হচ্ছেন ডিএমপি কমিশনার

আগামী ৩০ অক্টোবর অবসরে যাচ্ছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বর্তমান কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে। এ অবস্থায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গুরুত্বপর্ণ এই পদে কে আসছেন, এ নিয়ে নানান জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে মহানগর পুলিশের মধ্যে।

ডিএমপির ৩৬তম কমিশনার হিসেবে কে আসছেন, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই গুঞ্জনের পাশাপাশি চলছে রাজনৈতিক আলোচনাও। এ পদের জন্য নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণের জন্য কাজ করছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা। কর্মজীবনের সফলতা, বিশ্বাসযোগ্যতা আর সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা, এ রকম নানান সমীকরণ পার হয়েই বসতে হয় ঢাকার পুলিশপ্রধানের পদে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ডিএমপি কমিশনার পদের জন্য বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার যোগ্যতা যাচাই-বাছাই শেষ করেছে মন্ত্রণালয়। তবে যাকেই ঢাকা মহানগর পুলিশের পরবর্তী কমিশনার করা হোক না কেন, সবার আগে বিবেচনায় নেওয়া হবে তার সততা, যোগ্যতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টি।

আগামী মাসের ২৮ অক্টোবর বা ২৯ অক্টোবর ডিএমপি কমিশানার পদে কে আসছে তা জানা যাবে। ৩০ অক্টোবরই এ পদের যোগ্য ব্যক্তিকে দায়িত্ব দিয়ে নিয়োগ দিবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এরই মধ্যে পুলিশ মহলে ডিএমপি কমিশনার হিসেবে কয়েকটি নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। তাদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন গোপালগঞ্জ জেলার দুই কৃতী সন্তান। তারা হলেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম ও ঢাকা রেঞ্জের উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান। পাশাপাশি আলোচনায় আছেন অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলাম ও মাহবুবুর রহমান।

আলোচনার শীর্ষে থাকা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম ১৫তম বিসিএস কর্মকর্তা। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানার বাহাড়া গ্রামে।

আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও জঙ্গি দমনে মনিরুল ইসলাম অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর জঙ্গিবাদ নিয়ে রীতিমতো গবেষণা করেন তিনি। জঙ্গি নিয়ন্ত্রণ ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে তার অর্জন উল্লেখযোগ্য। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তার বিশেষ গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে।

তিনি বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)-এর প্রধান ছিলেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের সিটিটিসি ইউনিট গঠনেও মূল ভূমিকা পালন করেছিলেন।

আলোচনায় রয়েছে ঢাকা রেঞ্জের উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান ১৭তম বিসিএসের কর্মকর্তা। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের চন্দ্র দিঘলিয়া গ্রামে। সাহস, সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার জন্য তিনি তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং দুইবার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভূষিত হয়েছেন।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি), ডিএমপি সদর দপ্তরের উপকমিশনার, পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন), ডিআইজি প্রশাসনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন বিভিন্ন সময়ে।

পেশাগত ও মানবিক কাজের বাইরে সফল ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এবং এশিয়ান কাবাডি ফেডারেশনের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

ডিএমপি কমিশনার পদে আরো আলোচনায় রয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (ডেভেলপমেন্ট) হিসেবে কর্মরত মো. আতিকুল ইসলাম। তার বাড়ি রংপুর জেলার কোতোয়ালি থানার জুম্মাপাড়ায়।

বিসিএস ১২তম ব্যাচের মাধ্যমে ১৯৯১ সালে পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন তিনি। বিএসএমএমইউ থেকে ফার্মাকোলজি বিষয়ে স্নাতক এবং অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী তিনি।

আলোচনায় আছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশপ্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) মাহবুবুর রহমান। তার বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায়। ১৯৯৫ সালে তিনি ১৫তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার পদে যোগ দেন।

এএসপি হিসাবে নরসিংদী জেলা পুলিশ, সার্কেল এএসপি হিসাবে কিশোরগঞ্জ জেলার সদর সার্কেল ও বাজিতপুর সার্কেলে এবং এএসপি সদর সার্কেল হিসাবে নেত্রকোণা জেলায় দায়িত্ব পালন করেন।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালি) হিসাবে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে দায়িত্ব পালন করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র‌্যাবে কর্মরত ছিলেন।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা জানান, অতিরিক্ত আইজিপির সমমর্যাদা হলো ডিএমপি কমিশনারের পদটি। এটি দেশের পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল পদ। দক্ষ ও যোগ্যরাই এই পদের দায়িত্ব পাবেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //