জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশুদিবস উপলক্ষে মেট্রোরেলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য আনন্দভ্রমণের আয়োজন করা হয়।
আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে শিশুদের মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশন থেকে উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি) স্টেশন ভ্রমণ করানো হয়। আবার সেখান থেকে আগারগাঁওয়ে ফিরে আসে তারা।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় দুটি ছাদখোলা বাসে তেজগাঁও ও মিরপুরের দুটি এতিমখানা থেকে ৭০ জন শিশুকে নিয়ে আসা হয় আগারগাঁও স্টেশনে। এরপর ১০টায় এই স্টেশন থেকে শিশুদের নিয়ে উত্তরার দিয়াবাড়ি স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বৈদ্যুতিক ট্রেন।
যে বাসে চড়িয়ে সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল, সেই বাসে করেই প্রথমবার মেট্রোরেলে চড়তে এসেছে ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া স্মৃতি আক্তার। আগারগাঁও স্টেশনে দাঁড়িয়ে সে যখন মেট্রোরেলের লাইনের দিকে তাকিয়ে ছিল, তার চোখেমুখে খেলা করছিল আনন্দ আর উত্তেজনা। মেট্রোরেলে চড়ে বসার পর জানালা দিয়ে অপার বিস্ময় নিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছিল স্মৃতি। তার পাশের আসনে লামিয়া, রাকিবা, ঝুমুরসহ সবার মধ্যেই একই রোমাঞ্চ।
মেট্রোরেলের ভেতরে জানালার ধারে বসা স্মৃতি আর তার বন্ধুদের পরনে ছিল লাল পোশাকের ওপরে বঙ্গবন্ধুর ছবিওয়ালা সাদা টি শার্ট, মাথায় ক্যাপ। প্রথমবার মেট্রোরেলে চড়ার জন্য ভীষণ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় ছিল সে।
স্মৃতি জানায়, আমার অনেক ভালো লাগছে। এতদিন টিভিতে মেট্রোরেল দেখছি। প্রথম সামনে দেখলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ এই মেট্রোরেল করে দেওয়ার জন্য।
সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন মেট্রোরেলে যাত্রীদের স্বাভাবিক ভিড় থাকলেও ছুটির দিনগুলোতে দেখা যায় অন্য চিত্র। ব্যস্ত সপ্তাহ শেষে একটু বিনোদনের আশায় পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে শুক্র ও শনিবার মেট্রো ট্রেনে চড়ে বসেন অনেকে। তেমনি নাতি ঈষান আজাদকে নিয়ে মোট্রোরেলে চড়তে এসছেন ‘অদির প্রতিবন্ধী’ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কোহিনুর আজাদ মলি।
প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) আমাদের মেট্রোরেল উপহার দিয়েছেন। নাতিকে নিয়ে এই মেট্রোরেল ভ্রমণে এসে খুবই আনন্দ পাচ্ছি।
দিয়াবাড়ি স্টেশনে পৌঁছে সেখানে মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রের ভিডিও রুমে কেক কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে শিশুরা। সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার এবং বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম।
নীলিমা আখতার বলেন, শিশুদের নিয়ে এই ব্যতিক্রম আয়োজন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই। জাতির পিতার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।
বিআরটিসি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, সাফজয়ী মেয়েদের সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য আমরা একটি দ্বিতল বাসকে ছাদখোলা করেছিলাম। পরে আরেকটি বাসকেও ছাদখোলা করেছি। এখন দুটি বাসের একটি পদ্মা সেতু ভ্রমণের জন্য এবং আরেকটি ঢাকা শহরের ভেতরে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিশুদের জন্য আজকে দুটি গাড়িই এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি জানান, শিশুদের আনন্দ ভ্রমণের জন্য কোন প্রতিষ্ঠান ছাদখোলা বাস দুটি ব্যবহার করতে চাইলে সাশ্রয়ী ভাড়ায় সেটি নিতে পারবে। এরপর, মেট্রোরেলে করে আগারগাঁওয়ে ফিরে শিশুদের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হয়।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh