আইসিইউতে চিকিৎসাধীন সন্তান, অন্যের নবজাতককে চুরি করলেন মা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন শিশুর বেঁচে থাকার সংশয় থাকায় অন্যের নবজাতককে চুরি করেছেন নুসরাত নামের এক নারী। পরে রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর থেকে নুসরাত ও তার স্বামী-শাশুড়িসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, গত ২৮ আগস্ট ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রাজমিস্ত্রি হিরোন মিয়া ও সাহানা বেগম দম্পতির পুত্র শিশুর জন্ম হয়। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হওয়ায় বুকের দুধ পান করাতে পারছিলেন না মা সাহানা। একই সময় পাশের ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন নুসরাত নামে এক নারী। তার সন্তান আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকায় সাহানার নবজাতককে দুগ্ধ পান করাতে এগিয়ে আসেন তিনি। পরে সুযোগ বুঝে সাহানার তিনদিন বয়সী নবজাতককে চুরি করেন নুসরাত।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে শিশু চুরির ঘটনায় নুসরাতসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন- নুসরাতের স্বামী নাজমুল হোসেন তুষার, শাশুড়ি নাহার বেগম ও ননদ নাদিরা ওরফে খুরশিদা।  আজ রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন।

তিনি জানান, দুগ্ধ পান করানোর অজুহাতে ৩১ আগস্ট নিজের শিশুকে আইসিইউতে রেখে হিরোন ও সাহানা দম্পতির নবজাতককে নিয়ে পালিয়ে যান নুসরাত।

ডিসি আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে নুসরাত জানিয়েছে, তার শিশু আইসিইউতে ভর্তি থাকায় শিশুটির বেঁচে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিলেন তিনি। এ কারণে নুসরাত হাসপাতাল থেকে অন্যের নবজাতক চুরি করে নিয়ে যান।

এরপর শিশুটিকে নিয়ে আজিমপুর এলাকায় স্বামী তুষারের হাতে তুলে দেন নুসরাত। এরপর আবার হাসপাতালের বেডে এসে শুয়ে থাকেন। আর তুষার শিশুটিকে তাদের বাসায় নিয়ে যান।

শাহবাগ থানা পুলিশ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখতে পায়, নুসরাত নবজাতকটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে চুরির বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কামরাঙ্গীচর এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে নুসরাতের স্বামী, শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, নুসরাতও সিজারের রোগী। তিনি অসুস্থ থাকায় থানা পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //