অবশেষে বৃষ্টি খাতুনের মরদেহ হস্তান্তর

অবশেষে রাজধানীর বেইলি রোডের আগুনের ঘটনায় নিহত বৃষ্টি খাতুনের (অভিশ্রুতি শাস্ত্রী) মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

ঘটনার ১১ দিন পর আজ সোমবার (১১ মার্চ) বিকালে বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ মেয়ের মরদেহ বুঝে নেন। ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম পরিচয়ের বিতর্ক নিরসনের পর অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বৃষ্টির মরদেহ হস্তান্তর করে।

মরদেহ গ্রহণ করে বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে সাংবাদিকদের বলেন, সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমিই তার বাবা। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া।

তিনি বলেন, মৃতদেহ পেয়েছি। তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবো। সেখানেই ইসলাম ধর্মমতে জানাজা দিয়ে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বনগ্রাম পরিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হবে।

হিন্দু মুসলিম নিয়ে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছিল, সে বিষয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে মৃতের বাবা আরও বলেন, হিন্দুদের অনুষ্ঠানে গেলেই কি মানুষ হিন্দু হয়ে যায়? অনেকেই হিন্দুদের অনুষ্ঠানে যান। তাই বলে কেউ হিন্দু হয়ে গেছেন?

ঢাকা মেট্রো সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ডিএনএ প্রোফাইলের মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত হয় রবিবার। সোমবার আড়াইটার দিকে মরদেহটি তার বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে বিভিন্ন স্থানে চাকরি করেছেন মেয়েটি। তাই তারা দাবি করতেই পারেন। পরে তারা বুঝতে পেরেছেন এবং মরদেহটি তারা বাবা-মায়ের কাছেই হস্তান্তর করার জন্য থানায় লিখিত দিয়েছেন। সে সময় রমনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে বিকাল ৩টার দিকে বৃষ্টির বাবা অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বৃষ্টিসহ ৪৬ জন মারা যান। বৃষ্টি তার বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি মূলত মুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু অভিশ্রুতি নামে নিজেকে পরিচয় দেওয়ার কারণে তার লাশ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মৃত্যুর পর রমনা মন্দিরের পুরোহিত বৃষ্টিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুন নিজের সন্তান বলে দাবি করেন। এরপর মরদেহ শনাক্ত করতে নেওয়া হয় ডিএনএ নমুনা। নমুনা নেওয়ার ১১ দিন পর বৃষ্টির ডিএনএ’র সঙ্গে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ মিলেছে।

বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের প‌শ্চিমপাড়ায়। কলেজের সার্টিফিকেট, জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম বৃষ্টি খাতুন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //