পশু বেশি ক্রেতা কম, আজ থেকে বাড়তে পারে বিক্রি

আর মাত্র একদিন বাদেই ঈদুল আযহা। এরই মধ্যেই রাজধানীসহ সারাদেশের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে তুলনামূলক ছোট-বড় সাইজের দেশীয় প্রজাতির গরু হাটে উঠেছে। তবে এবারের হাটে ক্রেতা সমাগম একেবারেই কম। ক্রেতা-দর্শনার্থীতে হাটগুলো পরিপূর্ণ থাকলেও বেচাকেনা তেমন জমে ওঠেনি বলে দাবি বিক্রেতাদের। আর ক্রেতাদের দাবি দাম বেশি। সামর্থ্যের মধ্যে মনের মতো পশু না পাওয়ায় এখনও কিনছের না তারা। যদিও আজ শনিবার (১৫ জুন) থেকে বিক্রি বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা।  

বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানীর ২৩টি হাটে শুরু হয়েছে পশু বিক্রি। ঈদের আর বাকি আছে একদিন। সে হিসেবে আজ শনিবার ও আগামীকাল রবিবার বিক্রির ‘পিক আওয়ার’, বলছেন বিক্রেতারা।

এদিকে, ‘ব্যবসায়ীরা পশুর অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন’ উল্লেখ এক গরু ক্রেতা বলেন, বিক্রেতারা গরুর যে দাম বলছেন, তাতে প্রতি কেজি এক হাজারেরও বেশি দাম পড়ে। কেউ কেউ আবার এমন দাম বলছেন, যা কেজিপ্রতি এক হাজার ২০০ টাকারও বেশি পড়ছে। এটা বাড়াবাড়ি।

রাজধানীর প্রধান পশুর হাট গাবতলীসহ বেশ কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ হাটই কোরবানির পশুতে ভরে উঠেছে। কুষ্টিয়ার মেহেরপুর থেকে আগত এক ব্যবসায়ী তিনটি বড় গরু এনেছেন গাবতলীর হাটে। তিনি দাবি করেন, একটি গরুর ওজন এক টন, আর বাকি দুইটি গরুর একেকটির ওজন ২০ মনের মতো।

তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেমন দাম হলে বিক্রি করবেন একেকটি গরু? জবাবে তিনি বলেন, দামের কথা পরে। আগে তো ক্রেতা আসতে হবে! আজ চারদিন এখানে এসেছি, একজন ক্রেতা এসে ঠিকঠাক দরদাম করলো না। তবে, হতাশ হচ্ছি না। ঢাকার মানুষের গরু কিনে বাসায় রাখার সুযোগ কম। সেজন্য শনিবার, রোববার ও ঈদের দিন ভোরে ভালো বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এক টন ওজনের গরুর দাম ২০ লাখ হলে বিক্রি করব। বাকি দুইটি ১৫ লাখ করে।

আরেক বিক্রেতা বলেন, আমি গত মঙ্গলবার চারটি গরু এনেছি সিরাজগঞ্জ থেকে। ছোট একটি গরু বিক্রি করেছি। এখনও তিনটি গরু আছে। এখনও ক্রেতা আসেনি ঠিকঠাক। অবশ্য প্রতিবার এমনই হয়। আমি কোরবানি উপলক্ষে এখানে নিয়মিত গরু আনি। সাধারণত ঈদের আগের দিন বেশি বেশি গরু বিক্রি হয়। কারণ ঢাকার অধিকাংশ ক্রেতা একেবারে ঈদের মুখে কোরবানির পশু কিনছে পছন্দ করেন।

কাউছার উদ্দিন ঢাকার লালবাগের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি ছেলেকে নিয়ে গাবতলীর গরুর হাটে যান শনিবার সকালে। গরু দেখতে দেখতে কাউছার বলেন, মূলত গরু দেখতে এসেছি। খুব পছন্দ আর দরাদামে পটে গেলে নিয়ে যাবো, না হলে কাল আসব। শুরুর দিকে বিক্রেতারা দাম বেশি বেশি হাঁকান। শেষের দিকে পশু বিক্রির তাড়া থাকে। তখন একটু দাম কমে। আবার বিপরীত অবস্থাও দেখা যায় মাঝেমধ্যে। দেখা গেল গরুর দাম অনেক বেড়ে গেল ঈদের আগের দিন। এমনটা হতেই পারে। সব বিবেচনায় আজ আসা। পছন্দ হলে আজ নেব, না হলে কাল নেব।

গাবতলীর পশুর হাটে ছোট-বড় সব মিলিয়ে ১২ থেকে ১৪ হাজার পশু উঠেছে। এ হাটে মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। বড় ও ছোট গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ কম। কারণ সাধ ও সাধ্যের বিচারে মাঝারি সাইজের গরুর প্রতি আগ্রহ বেশির ভাগ ক্রেতার। তাই মাঝারি ধরনের গরুর দিকে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা।

বেপারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বড় গরু নিয়ে আসতে ঝামেলা পোহাতে হয়। ছোট গরু নিয়ে এলে বিক্রি করা যায় না। তবে মাঝারি গরু নিয়ে তারা চিন্তিত নন। কেননা মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে দাম হলে ক্রেতারা বেশি সাড়া দিচ্ছেন।

গাবতলী হাট ঘুরে দেখা গেছে, এবার ছাগলের দাম একটু বেশি। ৮-১০ কেজি ওজনের ছাগল ৭-৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ১২-১৪ কেজি ওজনের ছাগল বা খাসি ১০-১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ হাটে তুলনামূলক কম দামে ছাগল বিক্রি হতে দেখা গেছে। বড় আকারের ছাগল ৪০-৪২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের ৩০-৩২ হাজার টাকায়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //