আলোচনা-সমালোচনার বিপিএল

ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট আসর হিসেবে বিশ্বের সেরাদের কাতারে নাম রয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল)। ২০১২ সাল থেকে নিয়মিতই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই টুর্নামেন্ট। 

এবার অনেকটাই নতুনত্ব আনা হয়েছে বিপিএলে। প্রতিবার যেখানে ফ্রাঞ্চাইজিগুলো বিভিন্ন মালিকানায় থাকে এবার সেখানে বিসিবি একাই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে, সেখানে নতুনত্ব না বলে উপায় নেই। সে কারণে এবারের আসরকে ‘বিশেষ বিপিএল’ নামকরণ করা হয়েছে। 

দেশি ক্রিকেটারদের পাশাপাশি এবার প্রায় চারশ ক্রিকেটার নাকি বিপিএলে খেলতে নাম নিবন্ধন করেছে। পারিশ্রমিক নিয়েও নাকি কোনো চিন্তা করতে হবে না খেলোয়াড়দের। পাশাপাশি এবারের বিপিএলের নামকরণ করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। 

কিন্তু এভাবে ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের রেকর্ড ক্রিকেট বিশ্বে খুব একটা নেই। কারণ বিভিন্ন দলের মালিকরা ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়েও খেলোয়াড়দের প্রাপ্য অর্থ দেয়া নিয়ে নানা ঝামেলা করেন। আর সেখানে দেশি-বিদেশি এতসংখ্যক ক্রিকেটারের আর্থিক বিষয়টি কীভাবে কী করবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। 

সব সময়ই আন্তর্জাতিক সূচির সঙ্গে সমন্বয় করে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বিপিএল আয়োজন করে আসছে। আগামী ৬ ডিসেম্বর থেকে ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএল’ আয়োজনে বিসিবির পক্ষ থেকে পোক্ত অবস্থানের কথা বলা হলেও এবার কিছুটা নমনীয় হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে শুরু হওয়া নিয়ে সেই শুরু থেকেই একটা অস্পষ্টতা ছিল। 

ফ্রাঞ্চাইজি মডেল থেকে বিগ ব্যাশের আদলে বিপিএলের মডেল পরিবর্তন করায় সূচি আর আগের মতো ঠিক রাখতে পারছে না বিসিবি। কারণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি টিম স্পন্সরশিপ। অংশগ্রহণকারী দলগুলোর নামও ঠিক করার পাশাপাশি প্লেয়ার্স ড্রাফটও চূড়ান্ত হয়নি। শুধু সম্প্রচার সত্ত্ব প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাছরাঙা ও জিটিভির সঙ্গে বহাল রয়েছে চুক্তি। সে কারণে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কাজ খুব বেশি দেখা যায়নি। 

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক শেখ সোহেল জানিয়েছেন, ৭ থেকে ১০ দিন পিছিয়ে যেতে পারে এবারের বিপিএল। কিছুটা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেন প্রভাবশালী এ পরিচালক।

খুব বেশি সময় যে পেছানোর সুযোগ নেই সেটি এখন অনেকটাই পরিষ্কার। কারণ ২০২০ সালের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল ২ টেস্ট, ৩ টি-২০ ম্যাচের অ্যাওয়ে সিরিজ খেলতে যাবে। যদিও এই সিরিজ নিয়ে এখনো ধোয়াশা রয়েছে। বিসিবি এখন বল ঠেলে দিয়েছে সরকারের কোর্টে। 

এবার সাত দলের বিপিএলে দল পরিচালনার জন্য থাকবেন একজন করে পরিচালক। বোর্ড পরিচালকদের মধ্যে যেকোনো সাত পরিচালক দল পরিচালনা করবেন। 

আয়োজকরা জানিয়েছে, বিদেশি কোচ, ট্রেনার, ফিজিও নিয়োগ দেবে বিসিবি। আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্ট আয়োজন করার পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক কোচ নিয়োগের পক্ষে আয়োজকরা।

বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। এর আগে সালাউদ্দিনের হাত ধরে শিরোপা জিতেছিল দলটি। ঢাকা ডায়নামাইটসও একবার শিরোপা পেয়েছিল খালেদ মাহমুদ সুজনের হাত ধরে। এছাড়া স্থানীয় কোচদের মধ্যে সারোয়ার ইমরান, নাজমুল আবেদিন ফাহিমরা ছিলেন। কিন্তু এবার আর তাদের কারোরই আর সেই সুযোগ থাকছে না। বিশেষ বিপিএলে অর্থাৎ বড় মঞ্চে কোচিং করানোর সুযোগ হাতছাড়া হচ্ছে স্থানীয় কোচদের। 

সেই কারণে এবারের বিপিএলকে অদ্ভুত নিয়মের আসর বললেও এতটুকু বাড়িয়ে বলা হবে না। এর বাইরে অনেক চমকও রয়েছে। বিদেশি কোচ, ট্রেনার, খেলোয়াড় থাকার পলে অনেকেই এই বিপিএলকে বিদেশি বিপিএল হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এবারের আসর এক মাসেরও বেশি সময়জুড়ে চলবে বঙ্গবন্ধু। এবারের সপ্তম আসরটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে উৎসর্গ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //