স্থগিত সিরিজগুলো নিশ্চিত, বাকি শুধু অস্ট্রেলিয়া

ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে ডামাডোলের মধ্যে খেলাটা মুখ্য থাকার কথা থাকলেও, সেটা এখন অনেকটাই গৌণ হয়ে পড়েছে। কিন্তু ক্রিকেট ঠিকই নিজেদের সিরিয়াস অবস্থানে রয়েছে। 

বিশেষ করে করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতির মুখে পড়া ক্রিকেটটা যেন এবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কারণ একটা সিরিজ স্থগিত কিংবা বাতিল হওয়া মানে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি। বোর্ডের পাশাপাশি এই ক্ষতি ক্রিকেটারদেরও হয় সমানভাবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলেও থেমে নেই জীবনযাত্রা। এই অবস্থার মধ্যেও চলছে মাঠে ক্রিকেট ফেরানোর প্রস্তুতি।

ক্রিকেটাররা শুরুতে ব্যক্তিগত অনুশীলন করার পর গত সপ্তাহে সম্মিলিতভাবে অনুশীলন শুরু করেছে। সবকিছুর মূলে আসন্ন শ্রীলংকা সফর। এই সিরিজে দীর্ঘ এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফিরতে পারেন সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। 

এর আগে বেশ কয়েকটি সিরিজ করোনার কারণে স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন সেই সিরিজগুলো সুবিধাজনক সময়ে আয়োজনের পরিকল্পনা সাজাতে ব্যস্ত। আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া আর পাকিস্তান আবারো সিরিজগুলো আয়োজনে রাজি থাকলেও অস্ট্রেলিয়া এখনো নিশ্চিত করে কিছু জানায়নি। করোনার ভয়াল থাবায় আটকে থাকা এ সময়ে বাংলাদেশের চারটি সিরিজ স্থগিত হয়েছে। করোনায় খেলাধুলা বন্ধ না থাকলে এই সময়ে তিন টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে থাকার কথা ছিল নিউজিল্যান্ডের; কিন্তু সেটি আর হয়নি। 

পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে স্থগিত সিরিজগুলো আয়োজন করতে বিসিবি যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে- নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সাথে। অস্ট্রেলিয়া ছাড়া স্থগিত হয়ে যাওয়া তিনটি সিরিজ নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

বাংলাদেশকে নিয়ে এমনিতে সবসময়ই একটা নেতিবাচক দিক কাজ করে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দলটির। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কখনোই চায় না বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে তাদের নামটি থাকুক। বলা যায়, অনেকটা বাধ্য হয়েই টাইগারদের সাথে খেলে থাকে এলান বোর্ডার, স্টিভ ওয়াহ, রিকি পন্টিংদের উত্তরসূরিরা। 

স্থগিত হওয়া সিরিজ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও আমার দ্রুততম সময়ের মধ্যে মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে চাই। সে কারণে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সাথে আমাদের একটা বোঝাপড়া হয়েছে, আগামী বছর মাঝামাঝি সময়ে আমরা সিরিজটি নিশ্চিত করব।’ 

বাকি সিরিজগুলো নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি একটি সুবিধাজনক সময়ে অস্ট্রেলিয়ার সাথে সিরিজটি আয়োজন করতে। তবে কেবল আমরা প্রস্তুত থাকলেই হবে না, অস্ট্রেলিয়ার মতো বড় দলের সুযোগ সুবিধাগুলোও দেখতে হবে। পাকিস্তানের সাথে একটি টেস্ট বাকি, সেটাও আয়োজনের বিষয়েও আমরা যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি’। 

সবমিলিয়ে আশার আলো ফোটানোর মতো একটা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। চলতি বছর স্থগিত হওয়া নিউজিল্যান্ডের বাংলাদেশ সফর আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে করার ব্যাপারে আলাপ এগিয়েছে বিসিবি। এদিকে চলতি মাসের শেষ দিকে তিন টেস্টের সিরিজ খেলতে শ্রীলংকায় যাবার কথা রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। অক্টোবরের ২৪ তারিখ থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ-শ্রীলংকার মধ্যকার টেস্ট সিরিজ। সে হিসেবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে লংকানদের বিপক্ষেই টেস্ট সিরিজে ফিরতে পারেন সুপার সাকিব। অপেক্ষাটা সাকিবের যেমন, তেমন তার চেয়েও বেশি পুরো বাংলাদেশের। সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরা সেই অপেক্ষায় দিনাতিপাত করছেন।

এই সিরিজের জন্য ‘উইন্ডো’ বের করার অপেক্ষায় থাকা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই বিসিবির। তবে অন্য স্থগিত সিরিজগুলোর ভাগ্য এ রকম নয়। বরং সেগুলো নিশ্চিত হওয়াটা শুধুই সময়ের ব্যাপার। গত মার্চে ভারতীয় উপমহাদেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় বিসিবি সবার আগে স্থগিত করে বাংলাদেশ দলের তৃতীয় দফার পাকিস্তান সফর, যাতে দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্ট ছাড়াও একটি ওয়ানডে খেলার কথা ছিল জাতীয় দলের। 

সবমিলিয়ে এখন অপেক্ষা করা ছাড়া যেন কোনো উপায় নেই।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //