লঙ্কা সফরের অনিশ্চয়তা কাটেনি, অপেক্ষায় বিসিবি

সব ঠিক থাকলে আজ রবিবারই শ্রীলঙ্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। কিন্তু শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাইডলাইন ইস্যুতে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। ক্রিকেটারদের অনুশীলন তাই তিনদিনের জন্য বন্ধ রেখেছে বিসিবি। 

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান জানান, আগের সব পরিকল্পনা পিছিয়ে যাওয়ায় নিয়মিত অনুশীলন আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

শ্রীলঙ্কা সফর আগের সূচিতে হলে, শনিবারই ছিল অনুশীলনের শেষ দিন। শনিবার পর্যন্ত তাই অনুশীলন সূচি বানিয়ে রেখেছিল বিসিবি। কিন্তু সফর নিয়ে কোন অগ্রগতি না হওয়ায় জরুরী সভায় বসেন প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী, অপারেশন্স চেয়ারম্যান আকরাম খান, দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন ও হাবিবুল বাশার।সভা শেষে আকরাম জানান, আপাতত ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিচ্ছেন তারা, ‘আমরা বসেছিলাম শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে। প্রথমে তো আজ রবিবার  ফ্লাইট ছিল, কিন্তু যেহেতু যেতে পারছি না, কাজেই আমাদের পরিকল্পনা কি হবে তা নিয়ে নির্বাচক ও সিইওর সঙ্গে সভা করেছি। আমরা তিন দিনের বিরতি দিয়েছি। তারপর আবার আমরা অনুশীলন চালাব। আর আশা করছি দুই-তিনদিনের মধ্যে উত্তরটা আসবে শ্রীলঙ্কা থেকে।’

বায়ো সিকিউর বাবল বা জৈব সুরক্ষিত বলয়ের অংশ হিসেবে ২০ সেপ্টেম্বর থেকেই হোটেলে উঠেছিলেন ক্রিকেটাররা। সেদিন থেকেই চলছিল অনুশীলন। করোনা আক্রান্ত আবু জায়েদ রাহি ও আইসোলেশনে থাকা ইবাদত হোসেন ছাড়া ২৫ ক্রিকেটার সুরক্ষা বলের মধ্যে হোটেল সোনারগাঁ থেকে অনুশীলন করছেন। তবে বিরতি দিলেও আপাতত ক্রিকেটারদের হোটেলেই ধরে রাখার চিন্তা করছেন বলে জানান আকরাম। 

শ্রীলঙ্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড দুই -তিন দিনের মধ্যে ইতিবাচক বার্তা পেয়ে যাবে বলে আশা করছেন আকরাম। তিনি বলেন, তাদের চাওয়ামতো সব হলেও সফর পিছিয়ে যাবে অন্তত ১০ দিন, ‘যদি সব ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যায় তাহলে আগামী মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মাঝে আমরা যেতে পারি। যেহেতু ওদের প্রিমিয়ার লিগটা পিছিয়ে যাচ্ছে, কাজেই ওদের কাছেও সময় আছে।’

গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছিলেন, খুব বেশি সময় অপেক্ষা করবে না বিসিবি এবং একবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেলে আর পিছপাও হবে না বোর্ড। সফরে যেতে মরিয়া বলেই কি এখনও অপেক্ষা করে চলেছে বিসিবি? আকরাম দিলেন ব্যাখ্যা, ‘আমরা মরিয়া নই। ব্যাপারটি হলো, এখন আমাদের হাতে সময় আছে, ওদের হাতেও আছে। ওরাই বারবার অনুরোধ করে আমাদেরকে বলছে যে ওদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বোঝাতে পারবে। এমন নয় যে ওরা চাচ্ছে না, আমরা জোর করে যাচ্ছি। মরিয়া হলে তো ওদের শর্ত মেনেই যেতে পারতাম। আমাদের তাড়াহুড়ো নেই। আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো ক্রিকেটারদের ভালো থাকা, ওরা যাতে মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে না পড়ে এবং ওদের কাছ থেকে সেরা পারফরম্যান্সটা যেন বের করে আনতে পারি। গিয়ে যেন ভালো পারফর্ম করতে পারি, সেটি নিশ্চিত করার জন্য যা দরকার, আমরা করব।’

এদিকে, অনুশীলনে বিরতি পাওয়ায় হোটেলে গিয়ে আবার অনেক ক্রিকেটারই যার যার বাসায় ফেরত যাচ্ছেন। ঢাকার বাইরের ক্রিকেটাররা চলে আসছেন মিরপুর একাডেমি ভবনে। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক ডা. দেবাশীষ চৌধুরী জানান, সাময়িকভাবে এই বলয় ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন ক্রিকেটাররা, ‘এই তিনদিন বায়ো সিকিউর বাবলটা থাকছে না। হোটেল ছেড়ে সবাই বাসায় যাবে। আবার যখন অনুশীলন শুরু হবে তখন বাবল তৈরি করে নিতে হবে। অর্থাৎ আরেক দফায় কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে। নেগেটিভ আসার ভিত্তিতে হোটেলে তোলা হবে।’ হোটেল ছেড়ে বেরুতে পারলেও ক্রিকেটারদের ঝুঁকি এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে বিসিবির পক্ষ থেকে, ‘তবে এমনিতে আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি যাতে সামাজিক কোন অনুষ্ঠানে এই সময়ে না যায়। বাসাতেই থাকে।’

শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার আগে নতুন স্বাস্থ্য নির্দেশিকা হাতে পেতে হবে বিসিবির। সেটি হাতে পেতে আরও দুই-তিন অপেক্ষাতেই থাকবে বিসিবি। নির্দেশিকা হাতে পেলে তবেই নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে বিসিবি। সব ঠিক থাকলে অক্টোবরের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে শ্রীলঙ্কা যাবে বাংলাদেশ।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //