বাংলাদেশকে হারিয়ে সমতায় জিম্বাবুয়ে

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের কাছে ২৩ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এ জয়ের পর ৩ ম্যাচ সিরিজের ১-১ সমতায় ফিরেছে জিম্বাবুয়ে।

জিম্বাবুয়ের দেয়া ১৬৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে মাহামুদউল্লাহরা।

আগের ম্যাচে দুই ফিফটিতে বাংলাদেশকে জয় উপহার দেয়া নাইম ও সৌম্য সাজঘরে ফেরেন দ্রুত। এরপরে দ্রুত ফেরেন পরিক্ষীত সাকিব আল হাসান ও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও।

মুজারাবানির বলে ধরা দিয়ে ৫ রানে সাজঘরে ফেরেন নাইম, একই ওভারে ৮ রান করে ফেরেন সৌম্য। ১০ বলে ১২ রানে স্পিনার মাসাকাদজার বলে ধরা দিয়ে ফেরেন সাকিব। আর একইভাবে ৪ রান করে ক্যাচ তুলে ফেরেন রিয়াদও।

পরে ছয় মারতে গিয়ে মুসাকান্দার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মেহেদী হাসান। ফেরার আগে ১৯ বলে ১৫ করেন মেহেদী।

নুরুল হাসান সোহান আউট হন ৯ রান করে।

এরপর ১৩ বলে ২৯ রানের ছোট্ট ক্যামিও ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন অভিষিক্ত শামীম হোসেন পাটোয়ারি। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান কোনো জড়তা না দেখিয়ে ২২ গজে ঝড় তোলেন। ১৫তম ওভারে মাধেভেরেকে এলোমেলো করে ১৬ রান তুলেন শামীম। 

কিন্তু ১৬তম ওভারের প্রথম বলে তাকে থামিয়ে জিম্বাবুয়েকে আনন্দে ভাসান লুক জংওয়ে। ডানহাতি পেসারের বল ক্রস করতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন শামীম। ৩টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান এ ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ হারায় সপ্তম উইকেট।  

শামিমের পর সাইফুদ্দিনকে সাথে নিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন আফিফ। তবে সে আশা থামিয়ে ২৪ বলে ২৪ রান করে চ্যাতারার বলে ক্যাচ আউট হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন আফিফ। 

সাইফুদ্দিন তাসকিনকে সাথে নিয়ে সবশেষ চেষ্টা করলেও ম্যাচ ফেরাতে পারেনি। ১৯ ওভারের প্রথম বলে জংওয়ের বলে আউট হন সাইফুদ্দিন। একই ওভারের পঞ্চম বলে তাসকিন আউটন হলে বাংলাদেশের ইনিংস থেমে যায় ১৪৩ রানে। জিম্বাবুয়ে জয় পায় ২৩ রানে।

এর আগে হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিকরা। ওয়েসলে মাধেভেরের ফিফটির সঙ্গে ডিও মেয়ার্সের ২৬ ও রায়ান বার্লের ৩৪ রানের উপর ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। এই ম্যাচ জিতে টেস্ট ও ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন এখন ১৬৭ রান।

বাংলাদেশের হয়ে এদিন বোলাররা খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এই ফরম্যাটে একাধিক সিরিজ থাকায় দলের প্রায় সব বোলারকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে পরখ করে নিচ্ছেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আজ (শুক্রবার) সফরকারীদের হয়ে হাত ঘুরিয়েছেন ৭ জন। অভিষেকের স্বাদ পাওয়া তরুণ অলরাউন্ডার শামীম পাটোয়ারীও বল হাতে নিয়েছেন। তবে উইকেটের দেখা পাননি তিনি।

সফরকারীদের হয়ে ৪ ওভার বল করে ৩৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন পেসার শরিফুল ইসলাম। এ ছাড়া শেখ মেহেদী হাসান ও সাকিব আল হাসান ১টি করে উইকেট পান।

ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে টস ভাগ্য কথা বলে স্বাগতিকদের পক্ষে। এতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতে দুবার ভাবেননি অধিনায়ক সিকেন্দার রাজা। তবে শুরুটা ভালো হয়নি তাদের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে ফেরান টাইগার স্পিনার শেখ মেহেদী। মারুমানি আউট হন ৩ রান করে। এরপর ওয়েসলে মাধেভেরে ও রেগিস চাকাভার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় জিম্বাবুয়ে।

এই পার্টনারশিপ ভাঙতে পাওয়ার-প্লের ৬ ওভারেই পাঁচজন বোলারকে ব্যবহার করেন মাহমুদউল্লাহ। ফল আসে ষষ্ঠ ওভারে। নিজের প্রথম ওভার হাত ঘোরাতে এসেই দ্বিতীয় বলে চাকাভাকে তুলে নেন সাকিব। শরিফুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৪ রানে সাজঘরে ফেরেন চাকাভা। ৪২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর নতুন ব্যাটসম্যান ডিওন মেয়ার্সকে নিয়ে দলীয় সংগ্রহ বাড়িয়ে নেন মাধেভেরে। তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতক।

তৃতীয় উইকেটে দুজনের ৫৫ রানের পার্টনারশিপের মধ্যে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে নিজের তৃতীয় ফিফটির স্বাদ পান মাধেভেরে। ইনিংসের ১৮তম ওভারে আউট হওয়ার আগে নিজের ৫৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংসটি সাজান ৫টি চার আর ৩টি ছয়ের মারে। ফেরেন শরিফুলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে। তার আগেই অবশ্য সাজঘরের পথ ধরেন মেয়ার্স (২৬) ও রাজা (৪)।

শেষদিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন বার্লে। তার অপরাজিত ১৯ বলে ৩৪ রানের ইনিংসের সাহায্যে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ১৬৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করে জিম্বাবুয়ে। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //