কঠিন চ্যালেঞ্জ দেখছেন মুমিনুল

টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক মনে করেন, নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে অন্য দলগুলোকে একটি বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে সামনের দিনগুলোতে বিদেশে সিরিজ খেলতে গিয়ে আরো কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে তার দল। 

সিরিজের প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডকে ৮ উইকেটে উড়িয়ে ইতিহাস রচনা করেন মুমিনুলরা। অবশ্য ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি। ক্রাইস্টচার্চে সিরিজ নির্ধারণী টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। ম্যাচের পর মুমিনুল বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। মুমিনুল বলেন, এটা আমাদের জন্য অসাধারণ এক অর্জন।

তিনি বলেন, আমাদের টেস্ট দল নিয়ে তো কাজের অনেক বাকি আছে। উন্নতির তো অনেক কিছুই বাকি। আপনারা জানেন, আমি খুব কঠিন সময়ে নেতৃত্ব পেয়েছিলাম। তখন আমি স্বপ্ন দেখতাম বড় দলের বিপক্ষে ম্যাচ জেতার। মানুষের বিশ্বাসটা তো আসে চোখে দেখার (করে দেখানোর) জন্য। প্রথম টেস্ট জেতা খুবই দরকার ছিলো। এখন আমি, দলের সবাই বিশ্বাস করতে পারছি, আমাদের সামর্থ্য আছে। বিদেশে গিয়ে টেস্ট ম্যাচ জেতা যায়। একটা টেস্ট জিতলাম, পরে আরেকটা টেস্ট জিতবো, এভাবে এক সময় আমরা সিরিজ জিতবো। এই বিশ্বাসটা সবার ভেতরে আনা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। প্রথম টেস্ট জেতায় মনে হয় বিশ্বাসটা সবার ভেতরে এসেছে। ইতিবাচক অনেক কিছুই আছে। প্রথম টেস্ট যদি দেখেন, আমি সব সময় সংবাদ সম্মেলনে বলি, আমাদের দলীয় ফল তখনই ভালো হয়, যখন আমরা সম্মিলিতভাবে ভালো খেলি। সেটা ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং যাই বলেন। আমার মনে হয়, এটা একটা ইতিবাচক ব্যাপার ছিলো।

দ্বিতীয় টেস্টের ইনিংসে লিটন দাস সেঞ্চুরি পেয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ দলগত পারফরম্যান্স করতে পারেনি বলে হেরেছে বড় ব্যবধানে। প্রথম টেস্টে কোনো শতক না থাকলেও সবাই রান পেয়েছিল। বোলিং বিভাগও তাদের সেরাটা দিয়েছিল ওই ম্যাচে, ক্রাইস্টচার্চে যেটি অনুপস্থিত। তবে মুমিনুল ব্যক্তিগত অর্জনগুলোকে খাটো করে দেখছেন না। 

তিনি বলেন, দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে আমার মনে হয়, আমরা খুব বাজে ব্যাটিং করেছি। আমরা যতটা আশা করেছিলাম, বোলিংটাও তেমন করতে পারিনি। এরপরও প্রথম ইনিংসে ভালো (ব্যক্তিগত) ইনিংস ছিলো। রাব্বির ফিফটি ছিলো, সোহান ৪১ এর মতো করেছে। আমার মনে হয়, সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে, অধিনায়ক হিসেবে আমার আরো ভালো করা উচিত ছিলো। দ্বিতীয় ইনিংসে লিটনের সেঞ্চুরি অসাধারণ একটা ইনিংস। সোহানও খুব ভালো করছিল।

বিশেষ করে লিটন দাসের প্রশংসা করে মুমিনুল বলেন, লিটন টেকনিক্যালি অনেক সাউন্ড। লিটনের ব্যাটিং দেখলে তো মনে হয়, ও অনেক বেশি সময় পায়। বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের মতো। আর আমার মনে হয়েছে, খারাপ বল ছাড়া অন্য কোনো বলে ও চড়াও হয়নি। যে বলগুলো স্কোর করার মতো, সেগুলো কাজে না লাগাতে পারলে রান হবে না। আমার মনে হয়, দীর্ঘ একটা সময় অপেক্ষা করতে করতে যখন খারাপ বল বেশি পরিমাণে পেয়েছে তখন চড়াও হয়েছে। ব্যাটিং দেখতে খুব ভালো লাগছিল। আমরা সবাই খুব খুশি হয়েছি। এই বছরে টানা দুই সিরিজে দুটি সেঞ্চুরি করেছে, দলের সবাই খুশি। আমিও ওর ইনিংস খুব উপভোগ করেছিলাম ওর ব্যাটিংটা।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ ড্র করার পর ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোর আগ্রহ বাড়বে বাংলাদেশকে নিয়ে। ফলে ঘরের মাঠে পরের সিরিজগুলোতে আরো বেশি হিসাব-নিকাশ করে তারা মুখোমুখি হবে টাইগাদের। বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে বলে মনে করেন মুমিনুল। 

তিনি বলেন, আমার কাছে মনে হয়, টিম ওয়াইজ আমাদের জন্য আরো অনেক চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। কারণ, আমরা যখন বিদেশে খেলতাম, তখন ধরে নিতো আমরা বিদেশে খুব একটা ভালো করতে পারি না। প্রতিপক্ষ ওভাবেই চিন্তা করতো। এখন সবার মধ্যে সচেতনতা চলে আসবে। সামনে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ আছে, শ্রীলঙ্কা সিরিজ আছে এরপর আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে আছে। সবাই আরো বেশি সচেতন হবে। আমার কাছে মনে হয় আমাদের জন্য বেশি চ্যালেঞ্জ হবে। জিনিসটা এতো সহজ হবে না। এই চ্যালেঞ্জ জিনিসটা আমাদের নিতে হবে। প্রসেসটা কন্টিনিউ করতে হবে আমার কাছে মনে হয়।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //