টেস্টেও আগ্রাসী মনোভাব টাইগারদের

ঘাস ছেঁটে ফেলা হয়েছে অনেকটাই, তবুও মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ২২ গজি উইকেটের সবুজাভ ভাবটা যায়নি। উইকেটের ওপর কাটা ঘাস ছিটিয়ে দিয়ে রোলার চালানোর ফসল এটি। এমন উইকেট আজ মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) শুরু হতে যাওয়া টেস্টে কেমন আচরণ করবে তা বলা মুশকিল। তবে বাংলাদেশ এবং আয়ারল্যান্ড দুই শিবিরের ভাবনা একই, ভালো উইকেটেই হতে যাচ্ছে খেলা।

ক্রিকেট ম্যাচের আগের দিন প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের আগ্রহের কেন্দ্রে থাকে উইকেট। অনুশীলনের ফাঁকে সেটাতে এক নজর চোখ বুলিয়ে নেন তারা। ব্যাট-বলের লড়াইয়ে উইকেট কোন পক্ষ নেবে, সেটা আন্দাজের চেষ্টা চালান, যা একাদশ সাজানো এবং কৌশল নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। কিন্তু মিরপুরের রহস্যময় উইকেট ওভাবে বোঝা বড় কঠিন। এটি যদি অতীতকে ধারণ করে, তা হলে সেখানে রাজত্ব থাকবে স্পিনারদের। দেখা যাবে অসম বাউন্স, বড় বড় টার্ন। এমনটা হলে ব্যাটারদের দুর্ভোগ অনিবার্য।

যদিও সাদা বলের ক্রিকেটে ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে। উইকেট ছিল রানপ্রসবা। সেখানে আবার স্পিনার এবং পেসাররাও পেয়েছেন কিছু সুবিধা। মোদ্দা কথা উইকেট ছিল স্পোর্টিং। এবার টেস্টেও এমন উইকেটই প্রত্যাশা টাইগারদের। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান মিরাজ যেমন বললেন, ‘উইকেটটা আমরা দেখেছি। ভালো উইকেট করার চেষ্টা করেছে, যেন সবদিকেই আমরা ভালো করতে পারি। ব্যাটাররাও ভালো করতে পারি, পেসার-স্পিনাররাও।’

মাঠের মাঝের ২২ গজি জায়গাটা যেমনই হোক, টিম বাংলাদেশ জপছে আগ্রাসী ক্রিকেট মন্ত্র। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে যেমন আক্রমণাত্মক ছিল টাইগাররা, টেস্টেও এবার একই মনোভাবে আবির্ভূত হওয়ার অপেক্ষায় তারা। অনুশীলনেও মনোভাবটা স্পষ্ট প্রকাশ পেয়েছে। তার ওপর বিসিবিপ্রধান নাজমুল হাসান পাপনের এই নির্দেশনা, ‘টেস্টে আমরা ভালো করতে চাচ্ছি। এটা একটা চ্যালেঞ্জ। ছোট নাকি বড় টিম, সেটা মূল কথা নয়। ...আমি মনে করি, আমাদের শুধু জিতলেই হবে না...পুরো খেলাটায় ডমিনেট করতে হবে।’

দেশের ক্রিকেটের প্রধান কর্তা যখন এমন নির্দেশনা দেন, তখন আর দলের মনোভাব নিয়ে কোনোরূপ সংশয় থাকার কথা নয় কারও। তবুও যেটুকু সংশয় ছিল, সেটা দূর করে দিলেন মিরাজ, ‘আধুনিক ক্রিকেটে এখন সব সংস্করণেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেটও কিন্তু এখন বিশে^ যেমন চলছে, আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলছে সবাই। তো অবশ্যই আমরাও চেষ্টা করব।’ এই অফস্পিনিং অলরাউন্ডার যোগ করলেন, ‘আমরা যদি আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পারি, তা হলে তো ভালো। দিন শেষে রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি ১০০ ওভারে ৩৫০-৪০০ রান করতে পারি, এটা দলের জন্য এবং ক্রিকেটারদের জন্যও ভালো।’

আবার অতি আক্রমণাত্মক হয়ে বিপদ ডাকার পক্ষেও নয় টাইগার শিবির। তারা মূলত পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ইতিবাচক ক্রিকেটটা খেলতে চাইছেন, মিরাজ যেমনটা বললেন, ‘এটা উইকেটের উপর নির্ভর করে। কীভাবে উইকেট পড়ছে এবং বোলার কী রকম বল করছে (সেটাও দেখতে হবে)। দিন শেষে মানসিকতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ক্রিকেট বিশে^ এখন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খুব গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে খেলছি, নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছি, এটা গুরুত্বপূর্ণ।’ মিরাজ যোগ করলেন, ‘আক্রমণাত্মক ক্রিকেট বলতে টেস্ট ক্রিকেট অবশ্যই টেস্ট ক্রিকেটের মতোই খেলব। যদি নির্দিষ্ট কোনো ক্রিকেটারের কাছে মনে হয় যে আক্রমণাত্মক খেললে আমার জন্য ভালো, সেটি একেকজন ক্রিকেটারের নিজেস্ব পরিকল্পনা যে সে কীভাবে কী করবে।’

পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অনভিজ্ঞ আইরিশরা আদর্শ প্রতিপক্ষই। যদিও তাদের খাটো করে দেখছেন না টাইগাররা। তবে জয়টা নিজেদের পক্ষেই ধরে রেখেছে তারা। বিসিবি সভাপতির পর মিরাজের কথায়ও সেটারই আভাস, ‘আমরা টেস্ট ক্রিকেট অনেক দিন ধরে খেলছি। আমাদের অনেক ক্রিকেটার আছে। অবশ্যই আমাদের চেষ্টা থাকবে যেন ভালোভাবে জিততে পারি। দিন শেষে জেতাটাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ১ রানে জিতলেও জিতবেন, ১০০ রানে জিতলেও। প্রথম চেষ্টা থাকবে ম্যাচ জেতা।’

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

Ad

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2023 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //