ঢাকা টেস্ট: নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ে ধস

দুই ম্যাচ সিরিজের শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসের শুরুতেই চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিলো বাংলাদেশ। ১৭২ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। অল্প পুঁজি নিয়ে মিরপুরে স্পিন দিয়ে পাল্টা আক্রমণ স্বাগতিকদের। মিরাজ-তাইজুলের স্পিন ঘূর্ণিতে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ে কিউই ব্যাটাররা। আলো স্বল্পতার কারণে প্রথম দিন নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয় খেলা। দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান। মিরাজ ৩টি ও তাইজুল পেয়েছেন দুই উইকেট।

এর আগে আজ বুধবার শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। এই জিতলে বা ড্র করতে পারলে প্রথমবারের মতো কিউইদের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত হতো বাংলাদেশ। অথচ এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাটিংয়ের হতশ্রী রূপ দেখালো বাংলাদেশের ব্যাটাররা।

ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ৪৭ রানে ছিলো না ৪ উইকেট। তখন মনে হয়েছিলো, নতুন কোনো হতাশার রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ। তবে সেটি হয়নি। চরম বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে বলার মতো একটা জয়গায় এনে দিয়েছিলেন মুশফিকুর ও শাহাদাত।

এটি যে টেস্ট ফরম্যাটের খেলা, তা যেন ভুলেই গিয়েছিলেন ওপেনার জাকির হাসান। দিনের শুরুতেই বাজে ক্যাচে সাজঘরে ফিরে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের মুখে হাসি ফোটালেন জাকির। ২৪ বলে ৮ রান করে মিচেল স্যান্টনারকে আকাশে তুলে মিড-অন অঞ্চলে কেন উইলিয়ামসনের হাতে সহজ হন তিনি।

২৯ রানের মাথায় জাকিরের উইকেট হারানো যেন দিশা হারিয়ে ফেললেন পরবর্তী ব্যাটাররা। এরপরের ১৮ রান তুলতেই আরও ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। বাজেভাবে আউট হয়ে ফিরেছেন মাহমুদুল হাসান জয়, মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

জাকিরের দেখানো পথে হাঁটলেন আগের ম্যাচে ৮৬ করা ওপেনার জয়ও। অ্যাজাজ প্যাটেলের বল ঠেকাতে গিয়ে শর্টলেগে টম ল্যাথামের হাতে ধরা পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। ৪০ বলে ১৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান আগের টেস্টের প্রথম ইনিংসের সেরা ব্যাটার।

জয়কে ফেরানোর পর ব্যাক টু ব্যাক বল করতে এসে মুমিনুলকেও সাজঘরের পথ দেখান প্যাটেল। এটি তার দ্বিতীয় শিকার। বাঁহাতি কিউই স্পিনারের করা বল মুমিনুলের ব্যাটে চুমু দিয়ে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ হয়।

আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো অধিনায়ক শান্ত এই ম্যাচে দলের হাল ধরতে পারলেন না। এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে শান্তকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান স্যান্টনার। ১৪ বলে ৯ রান করেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

৪৭ রানে ৪ টপঅর্ডারকে হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে বাংলাদেশকে কিছুটা এগিয়ে মুশফিক ও শাহাদাত। লাঞ্চ-বিরতিতে যাওয়ার আগে স্বাগতিকদের স্কোরকার্ডে ৩৩ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটার।

বিরতির পর এসে সমর্থকদের হতাশ করেন মুশফিক। প্রথম কোনো বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে ফিল্ডিংয়ে বাধা দেওয়ার অপরাধে ‘হ্যান্ডলড বল’ আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরত যান এই ডানহাতি ব্যাটার।

ইনিংসের ৪১তম ওভারে কাইল জেমিসনকে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে ঠেকিয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু ডানহাতি এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে বল পিচে পড়ে উইকেটের পেছন দিকে যাচ্ছিল। মুশফিক ভেবেছেন, বলটি হয়তো স্টাম্পে আঘাত করতে পারে। যে কারণে তিনি হাত দিয়ে বলটি ঠেকিয়ে দেন। এতে কিউই ফিল্ডাররা আম্পায়ারের কাছে আউটের আবেদন জানান।

ফলে রিভিউ দেখে টিভি আম্পায়ার মুশফিকককে ইতিহাসের ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে ‘হ্যান্ডলড বল’ আউট ঘোষণা দেন। ফলে দেখেশুনে খেলে ৮৩ বলে ৩৫ রান করে ফিরলেন এই ডানহাতি। অপ্রত্যাশিত এই আউটে মুশফিক-শাহাদাতের করা ১৫১ বলে ৫৭ রানের জুটিটি ভেঙে যায়।

মুশফিকের ফেরার পর তার সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়া শাহাদাত বেশিক্ষণ টিকলেন না। দলীয় স্কোরকার্ডে ১৯ রান যোগ করতেই ফিরলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। নিজের নামের পাশে ৩১ রান লিখিয়ে গ্লেন ফিলিপসের বলে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ হন শাহাদাত।

এরপর মাঠে নেমে শুধু হতাশাই বাড়িয়েছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান। ১৬ বলে ৭ রান করে ফিলিপসের বলে স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। আগের ম্যাচে ফিফটি করা মেহেদী হাসান মিরাজ করেছেন মাত্র ২০ রান।

লোয়ারঅর্ডারে ৬ রান করেছেন তাইজুল ইসলাম। ১০ রান করেন শরিফুল ইসলাম। অপরাজিত থেকে ১১ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন নাঈম হাসান।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //