থম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল ভারত। এবার কেপটাউনে সেই প্রতিশোধ নিলো রোহিত শর্মার দল।
মোহাম্মদ সিরাজ ও জাসপ্রিত বুমরাহর উইকেট উৎসবে দেড় দিনেই ম্যাচ জিতে সমতায় সিরিজ শেষ করলো সফরকারীরা। তবে ফল হওয়া যেকোনো ম্যাচের তালিকায় সবচেয়ে কম স্থায়ীকাল নিয়ে ইতিহাস গড়েছে এই ম্যাচ।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দ্বিতীয় টেস্টে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জিতেছে রোহিত শর্মার দল। পুরো ম্যাচে মাত্র ৬৪২ বল খেলা হয়েছ। যা কিনা ইতিহাসের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ততম টেস্ট। এর মধ্য দিয়ে ৯২ বছর আগের বিশ্বরেকর্ড ভেঙেছে। সবশেষ ১৯৩২ সালে অস্ট্রেলিয়া বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার টেস্টের স্থায়ীকাল ছিল ৬৫৬ বল। সেই টেস্টে ইনিংস ও ৭২ রানে জয় পেয়েছিল অজিরা।
৭৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল। রোহিত শর্মাও তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন। তবে জয়সওয়ালকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন নান্দ্রে বার্গার। এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে লং লেগে ট্রিস্টিয়ান স্টাবসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ২৮ রানে ফেরেন জয়সওয়াল।
এরপর শুভমান গিলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। কাগিসো রাবাদার বলে বোল্ড হয়ে দুই বাউন্ডারিতে মাত্র ১০ রানে ফেরেন তিনে নামা এই ব্যাটার।
জয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন বিরাট কোহলিও। মার্কো জনসেনের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুশ করতে চেয়েছিলেন টপ-অর্ডার এই ব্যাটার। গ্লাভসে লাগলেও তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। এরপর রিভিউ নিয়ে কোহলিকে ফেরায় প্রোটিয়ারা। এরপর দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন আইয়ার এবং রোহিত।
এর আগে, টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৫৫ রানে অল-আউট হয়ে যায় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের হয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালান পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। ৯ ওভার বোলিং করে ৩ মেডেনসহ মাত্র ১৫ রান খরচায় ৬ উইকেট নেন এই পেসার। বাকি চারটি উইকেট নিজেদের মধ্যে সমান ভাগ করে নেন মুকেশ কুমার ও জাসপ্রিত বুমরাহ। অন্যদিকে প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ ১৫ রান করেন কাইল ভেরাইনে। এ ছাড়া বেডিংহাম করেন ১২ রান।
জবাব দিতে নেমে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করতে পারেনি ভারতও। যদিও ক্যাপ-টাউনের কঠিন উইকেটে ভালো জুটি গড়েছিলেন লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। তবে দলীয় ১৫৩ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফেরেন রাহুল। আর পরের ১০ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে যৌথভাবে লজ্জার রেকর্ডে নাম তুলেছে ভারত। এই সময়ে স্কোরবোর্ডে কোনো রানই যোগ করতে পারেনি ম্যান ইন ব্লুরা।
অকস্মাৎ ৬ উইকেট হারিয়ে ফেললেও প্রথম ইনিংসে ১৫৩ রান তুলে ৯৮ রানের লিড নেয় টিম ইন্ডিয়া। প্রথম ইনিংসে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন কোহলি। ৫৯ বলের এই ইনিংসে ৬ চার ও এক ছক্কা হাঁকান তিনি।
ওপেনার রোহিত শর্মা ৩৯ ও শুভমান গিল করেন ৩৬ রান। এ ছাড়া রাহুলের ব্যাট থেকে এসেছে ৮ রান। বাকিদের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি।
প্রোটিয়াদের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা, নান্দ্রে বার্গার এবং লুঙ্গি এনগিদি।
এরপর দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হয় প্রোটিয়া ব্যাটাররা। তবে ওপেনার মার্করামের প্রতিরোধে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জায় পড়ার শঙ্কা এড়ায় স্বাগতিকরা। ১৭ চার ও ২ ছক্কায় ১০৩ বলে ১০৬ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন তিনি। এতে ৯৮ রানে পিছিয়ে থাকা প্রোটিয়ারা ভারতকে ৭৯ রানের টার্গেট দেয়।
মার্করাম ছাড়া আর কোনো ব্যাটার ১২ রানের বেশি করতে পারেননি। জীবনের শেষ টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১২ রান করে ফেরেন এলগার। ডেভিড বেডিংহ্যাম এবং মার্কো ইয়ানসেন করেন ১১ রান করে। প্রোটিয়া শিবিরে ধস নামিয়ে এই ইনিংসে একাই ৬ উইকেট তুলে নেন বুমরাহ।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh