২০০৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ তো বটেই, ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বিশ্বের প্রতিটি ফ্রেঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্টেও সাকিব ছিলেন নিয়মিত মুখ।
বর্তমানে ৩৭ বছর বয়সী সাকিব চলে এসেছেন ক্যারিয়ার সায়াহ্নে। এরই মধ্যে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। দেড় দশকের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নানা বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক। কিন্তু কখনো প্রশ্ন ওঠেনি তার পারফরম্যান্স নিয়ে। অথচ ক্যারিয়ারের একেবারে পড়ন্ত বেলায় সাকিবের বোলিং অ্যাকশন ‘সন্দেহজনক’ বলে রায় দিয়েছেন ইংলিশ কাউন্টি ক্রিকেটের আম্পায়াররা। শুধু তা-ই নয়, আম্পায়ারদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের লাফবরো ইউনিভার্সিটির মেডিক্যাল বিভাগে বোলিং পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে পারেননি সাকিব। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটসহ যেকোনো স্বীকৃত ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে সাকিবের বোলিং।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) আয়োজিত কাউন্টি ক্রিকেটে সারের হয়ে খেলেন সাকিব। সমারসেটের বিপক্ষে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট নেন। তবে ম্যাচে তার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়াররা প্রশ্ন তোলায় সাকিবকে পাঠানো হয় পরীক্ষাগারে। ২ ডিসেম্বর সাকিব পরীক্ষা দেন বিশেষজ্ঞদের সামনে। ১০ ডিসেম্বর জানা গেছে, আম্পায়ারদের সন্দেহ সঠিক ছিল। তাই সাকিবকে আপাতত ‘অ্যাকশন’ শুধরে নেওয়ার শর্তে বোলিং থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
আইসিসির নিয়মানুযায়ী, কোনো একটি ক্রিকেট বোর্ড যদি একজন বোলারকে তাদের নিজস্ব নীতিমালার অধীনে ঘরোয়া ক্রিকেটে বোলিং নিষিদ্ধ করে এবং সেই নিষেধাজ্ঞা যদি স্বীকৃত পরীক্ষাগারে মানসম্মত বিশ্লেষণী বিধি অনুযায়ী করা হয়, তাহলে অতিরিক্ত কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, সব জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন এবং তাদের অধীন ঘরোয়া ক্রিকেটেও একই নোটিশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে।
আইসিসির নির্দেশনায় স্পষ্ট, সাকিব কোনো আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেট ম্যাচে বোলিং করতে পারবেন না। তবে তিনি ব্যাটিং বা ফিল্ডিং করতে পারবেন। আবার আইসিসি নীতিমালার ১১.৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সাকিবের বোলিং নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘১১.১ ও ১১.৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে সাসপেন্ড হওয়া সত্ত্বেও খেলোয়াড়কে তার জাতীয় ক্রিকেট ফেডারেশন ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় বোলিং চালিয়ে যেতে অনুমতি দিতে পারবে।’ অর্থাৎ বিসিবি চাইলে দেশীয় ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় সাকিবকে বোলিং করার অনুমতি দিতে পারে।
৩০ ডিসেম্বর থেকে মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ক্রিকেট। চিটাগাং কিংস স্কোয়াডে আছেন সাকিব। তবে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব বিপিএল খেলতে বাংলাদেশে আসবেন কি না নিশ্চিত না। সাকিব আপাতত খেলছেন লঙ্কা টি-১০ টুর্নামেন্টে, গ্যল মার্ভেলসের হয়ে। শ্রীলঙ্কায় ১০ ডিসেম্বরের পরেও সাকিব একটা ম্যাচ খেলেছেন এবং বোলিংও করেছেন। তবে সাকিব জানিয়েছেন, বোলিং পরীক্ষায় পাস না করতে পারার খবর তিনি পেয়েছেন ম্যাচের পর। আপাতত তিনি শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেই লঙ্কা টি-১০ টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলোতে খেলবেন।
সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
© 2025 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh