স্বাস্থ্যখাত ছাড়াও বিভিন্ন সেক্টরে সাহেদের প্রতারণা

রিজেন্ট হাসপাতাল ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন সেক্টরে প্রতারণার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ আবদুল বাতেন।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাত ছাড়াও বিশেষ করে শিক্ষা খাতেও তার প্রতারণার বিষয়টি তদন্তে পাওয়া গেছে।

পুলিশ রিমান্ডে থাকা সাহেদের মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে আজ শনিবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর মিন্টুরোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে একথা জানান তিনি।

সাহেদ ফেসবুকে ভুয়া কোম্পানির নামে পেজ খুলে প্রতারণা করতেন উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বাতেন বলেন, সাহেদ ফেসবুকে আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি নামের পেজ খুলে এই করোনাকালীন সময়ে পিপিই, মাস্ক ও ডেথ বডি ক্যারিয়ার ব্যাগ সাপ্লাই দিয়েছেন। স্বাস্থ্যখাতে সে প্রায় ৫০ হাজার পিপিই, এক লাখ মাস্ক ও ২০ হাজার বডি ক্যারিয়ার ব্যাগ সাপ্লাই দিয়েছেন। প্রকৃত পক্ষে আলবার্ট গ্লোবাল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি নামের কোনো গার্মেন্টসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। সে সাব কনট্রাক্টে ছোট গার্মেন্ট ও ফ্যাক্টরি থেকে নিম্নমানের কাপড় দিয়ে এসব সুরক্ষা সামগ্রী তৈরি করিয়েছিল।

তিনি বলেন,আমরা ধারণা করছি তার সাপ্লাই দেয়া নিম্নমানের এইসব সুরক্ষা সামগ্রী ব্যবহার করে প্রথম দিকে স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিতরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে এই বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।

চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদের কাছে এসব পিপিই, মাস্ক কীভাবে পৌঁছাল সেই প্রশ্নের উত্তর আব্দুল বাতেনের বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।

পরে এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার কাজী শফিকুল আলম বলেন, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে পিপিই কিনে হাসপাতালে হাসপাতালে বিতরণ করেছে। আলবার্ট কোম্পানিও সেগুলোর একটি, তারাও পিপিই দিয়েছিল। কিন্তু গোয়েন্দা পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, এই কোম্পানির নামে সাহেদের বিতরণ করা পিপিই সামগ্রী নিম্নমানের ছিল।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, সাহেদের প্রতারণার সংশ্লিষ্ট আমরা যেসব অনিয়ম পেয়েছি তা আইনানুযায়ী মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরকে জানাবো।

গত ৬ জুলাই র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। এই সময় পরীক্ষা ছাড়াই করোনার সনদ দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর ৭ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে র‌্যাব রিজেন্ট হাসপাতাল ও তার মূল কার্যালয় সিলগালা করে দেয়। 

রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ওই দিনই উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়। এরপর থেকে সাহেদ পলাতক ছিল। পরে ১৫ জুলাই ভোরে ভারতে পালানোর সময় সাতক্ষীরা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। সাহেদ ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডে রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //