অর্থ সঞ্চয়ের চার উপায়

অর্থ সঞ্চয় করা খুব প্রয়োজন। কিন্তু অনেকেই জানেন না কীভাবে সহজ উপায় অবলম্বন করে অর্থ সঞ্চয় করতে হয়। দেখা যায়, হাতে টাকা আসলেই খরচ হয়ে যায়! তবে টাকা বাঁচানোর ব্যাপারটা বলা যতো সহজ, করা ততোই কঠিন। আসুন জেনে নিই অর্থ সঞ্চয়ের সহজ চার উপায়।

খরচের হিসেব রাখুন
অর্থ সঞ্চয়ের প্রথম ধাপে আপনাকে নিজের খরচের পরিমাণ সম্পর্কে জানতে হবে। এক মাসের জন্য, আপনার সমস্ত ব্যয়ের হিসাব লিখে রাখুন। কফি, নিউজপেপার কিংবা স্ন্যাকস অর্থাৎ দৈনন্দিন জীবনের ছোট বড় সব খরচ তালিকাভুক্ত করতে হবে। চাইলে আপনি খরচগুলোকে বিভিন্ন ভাগে সাজিয়ে নিতে পারেন যেমন- গ্যাস, কারেন্ট বা অন্যান্য বিল, মুদিখানার খরচ বা ভাড়া। এতে কোন ক্ষেত্রে কতো খরচ হচ্ছে তা জানা সহজ হবে।

বাজেট তৈরি করুন
নিজের মাসিক খরচ সম্পর্কে যখন ভালো ধারণা পেয়ে যাবেন, তখন অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা করার জন্য বাজেট তৈরি করে নেয়াটা উত্তম। প্রতিদিনের নির্ধারিত বাজেট থেকে অল্প টাকা বাঁচিয়ে নিতে চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত খরচ সম্পর্কে সচেতন থাকুন এবং জরুরি আর্থিক প্রয়োজনের জন্য সেভিংস ফান্ডে আলাদা অর্থ  জমা রাখতে পারেন। তাছাড়া যে খরচগুলো নিয়মিত হয় (তবে প্রতি মাসে নয়) তার জন্য কিছু টাকা আলাদা করে রাখতে ভুলবেন না। যেমন ধরুন গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়মিত অর্থ ব্যয় করার প্রয়োজন হয়।

সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করুন
সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া কোনকিছুই সফলভাবে করা সম্ভব নয়- সেটা অর্থ সঞ্চয় বা অন্য কিছু হোক। সঞ্চয় করতে হলে আপনাকে কিছু হিসেব কষে এগোতে হবে। আপনি নিজের মাসিক আয়-ব্যয় বিবেচনা করে, আপনার বাজেটের মধ্যে একটি সেভিংস ক্যাটাগরি তৈরি করে নিতে পারেন। খরচের পরিমাণের কারণে যদি আপনার জন্য সঞ্চয় করা সম্ভব না হয়, তবে একটু কাটছাঁট শুরু করতে পারেন। না, আপনাকে প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিতে বলছি না। তবে অত্যাবশ্যক নয় এমন ক্ষেত্রে খরচ ভেবেচিন্তে করুন। যেমন ধরুন, বাড়ি বা গাড়ি ক্রয়ের জন্য সঞ্চয় করতে চাইলে আপনি বিনোদন বা বাইরে খেতে যাওয়ার মত অনাবশ্যক বিষয়গুলোতে খরচ কমিয়ে দিতে পারেন। ইন্টারনেট বা টেলিফোন ব্যবহারে মিতব্যয়ী হোন। এসব ক্ষেত্রে সচেতন থাকলে কিছুটা সেভ করা সম্ভব হয়।

সঞ্চয়ের লক্ষ্য নির্ণয় করুন
কোন উদ্দেশে সঞ্চয় করবেন সেটা আগে স্থির করুন। এতে সঞ্চয় শুরু করাটা সহজ হবে। নির্ধারিত আর্থিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে আপনার কতটুকু সময় লাগবে সেটাও জানা জরুরি। কিছু স্বল্প মেয়াদি (১-৩বছর) লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে: 
১. চাকরিচ্যুত হলে বা কোন আর্থিক প্রয়োজনে।
২. ৬ মাস থেকে ১ বছর আপনার ব্যয় নির্বাহ করতে পারবেন এইরূপ একটি জরুরি ফান্ড গঠন। 
৩. অবকাশ যাপনের জন্য সঞ্চয়।
৪. নতুন গাড়ি ক্রয়ের জন্য সঞ্চয়।
৫. কর পরিশোধের জন্য সঞ্চয়।
দীর্ঘ মেয়াদি সঞ্চয়ের লক্ষ্য অনেক বছর, এমনকি তা দশক পর্যন্ত চলে এবং এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
১. অবসরের জন্য সঞ্চয় করা।
২. সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য সঞ্চয়।
৩. বাড়ির পুনর্গঠনের জন্য সঞ্চয় ইত্যাদি।

খেয়াল রাখবেন আপনার আয় থেকে ব্যয়ের পরিমাণ যেন বেশি না হয়। বেশি হোক বা কম হোক প্রতি মাসে টাকা বাঁচানো নিশ্চিত করুন। তাতে খুব সহজে আপনার আর্থিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

বিষয় : তথ্যকোষ

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //