জিআই কী? বাংলাদেশের জিআই পণ্য কয়টি?

জিআই কি?

জিআই হলো ভৌগলিক নির্দেশক চিহ্ন যা কোনো পণ্যের একটি নির্দিষ্ট উৎপত্তিস্থলের কারণে এর খ্যাতি বা গুণাবলী নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত জিআইতে উৎপত্তিস্থলের নাম (শহর, অঞ্চল বা দেশ) অন্তর্ভুক্ত থাকে। জিআই (GI) এর পূর্ণরুপ হলো (Geographical indication) ভৌগলিক নির্দেশক। WIPO (world intellectual property organization) হলো  জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দানকারী প্রতিষ্ঠান।

বাংলাদেশের জিআই পণ্যসমূহ

জামদানি, ইলিশ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাতি আমের পরে এবার রাজশাহী সিল্ক, ঢাকাই মসলিন, শতরঞ্জি, চিনিগুঁড়া চাল, দিনাজপুরের কাটারিভোগ এবং বিজয়পুরের সাদা মাটির পর  ১০ম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বাগদা চিংড়ি।

এর আগে বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো জিআই পণ্য হিসেবে ২০১৬ সালে স্বীকৃতি পেয়েছিল জামদানি। এরপর ২০১৭ সালে ইলিশ, ২০১৯ সালে খিরসাপাতি আম, ২০২০ সালে ঢাকাই মসলিন এবং ২০২১ সালে রাজশাহী সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, কালিজিরা চাল, দিনাজপুরের কাটারীভোগ চাল এবং নেত্রকোনার সাদামাটি মোট ৫টি পণ্যকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

১. বাংলাদেশের প্রথম স্বীকৃতিপ্রাপ্ত জিআই বা ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হচ্ছে জামদানি। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন।

নিবন্ধিত হয়: ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সনদ প্রাপ্তি: ১৭ নভেম্বর ২০১৬

২. দ্বিতীয় ভৌগলিক নিদের্শক পণ্য হলো ইলিশ। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হলো মৎস্য অধিদফতর।

নিবন্ধিত হয়: ১৩ নভেম্বর ২০১৬

সনদ প্রাপ্তি: ১৭ আগস্ট ২০১৭

৩. তৃতীয় ভৌগলিক নিদের্শক পণ্য হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাত আম। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।

নিবন্ধিত হয়: ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সনদ প্রাপ্তি: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯

৪. চতুর্থ ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য বিজয়পুরের সাদা মাটি। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নেত্রকোনা।

নিবন্ধিত হয়: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১

৫. পঞ্চম ভৌগলিক নিদের্শক পণ্য দিনাজপুর কাটারীভোগ। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।

নিবন্ধিত হয়: ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১

৬. ষষ্ঠ ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য কালিজিরা। এটির আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান :বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।

নিবন্ধিত হয়: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সনদ প্রাপ্তি : ১৭ জুন ২০২১

৭. সপ্তম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য রংপুরের শতরঞ্জি। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প।

নিবন্ধিত হয়: ১১ জুলাই ২০১৯

সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১

৮. অষ্টম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য রাজশাহী সিল্ক। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ড।

নিবন্ধিত হয়: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১

৯. নবম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য ঢাকাই মসলিন। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড।

নিবন্ধিত হয়: ২ জানুয়ারি ২০১৮

সনদ প্রাপ্তি: ১৭ জুন ২০২১

১০. দশম ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য বাগদা চিংড়ি। আবেদনকারী ও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মৎস্য অধিদফতর।

নিবন্ধিত হয়: ৪ জুলাই ২০১৯

সনদ প্রাপ্তি: ২৪ এপ্রিল ২০২২

এ ছাড়া আরও একটি বাংলাদেশি পণ্য ফজলি আম জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত জিআই সনদ পায়নি।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তত্ত্বাবধান ও উদারীকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ২৩টি চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ‘বাণিজ্য-সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার চুক্তি বা ট্রিপস (ট্রেড রিলেটেড আসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস)। এই চুক্তির ২৭.৩ (খ) ধারায় পৃথিবীর সব প্রাণ-প্রকৃতি-প্রক্রিয়ার ওপর পেটেন্ট করার বৈধ অধিকার রাখা হয়েছে। এই চুক্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব প্রাকৃতিক ও মানুষের তৈরি এবং কৃষিজাত পণ্য দীর্ঘকাল ধরে উৎপাদিত হয়ে আসছে তার ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের মালিকানা প্রতিষ্ঠার জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক আইন করে নিবন্ধন করে রাখার বিধান রয়েছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //