‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের রূপ বদলে যাবে’

বাংলাদেশের সিনেমার অপার সম্ভানবনা রয়েছে বলে মনে করেন তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা পার্থ পৌলিনিউস ফলিয়া। তাঁর নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘জোঁক’ ইতোমধ্যে দেশ এবং দেশের বাইরে উল্লেখযোগ্য কিছু ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়েছে। এছাড়া পুরস্কার অর্জনের পাশাপাশি সিনেমা বোদ্ধাদের প্রশংসাও পেয়েছে।

নির্মাতা হিসেবে নিজের স্বপ্ন এবং একজন তরুণ নির্মাতার জায়গা থেকে বাংলাদেশের সিনেমা নিয়ে কথা বলেন পার্থ পৌলিনিউস ফলিয়া।

এই তরুণ নির্মাতা জানান, জোঁক সিনেমাটির নামের পেছনে আসলে বিশাল একটা কারণ রয়েছে। কেন সিনেমাটির নাম জোঁক রাখা হয়েছে? আসলে এখানে জোঁক বলতে সমাজকে বুঝিয়েছি আমরা। কারণ হচ্ছে, কোনো মেয়ে যখন ধর্ষণ হয় তখন আমাদের দেশের অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলোর পোস্টের নিচে বেশির ভাগ মানুষজনের কমেন্টেই দেখা যায় মেয়ের কাপড় কেমন ছিল বা মেয়ের কী দোষ ছিল। আবার একটা বাচ্চা মেয়ে যখন ধর্ষণ হচ্ছে সমাজের ভয়েই অনেক বাবা-মা চুপ রয়েছেন। তাহলে সমাজ এক রকমভাবে আমাদের জোঁকের মতো শুধু আঁকড়েই ধরছে না, বরং শোষণও করছে। করছে না কি?

পার্থ নির্মিত জোঁক চলচ্চিত্রটি ১১তম আন্তর্জাতিক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র উৎসব, ১২তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব, গ্লোবাল ইয়ুথ ফিল্ম ফেস্টিভাল, সেফালু ফিল্ম ফেস্টিভাল (সেমি ফাইনালিস্ট), লিট অফ সেশন, ল্যাঞ্চেস্টার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, সিএইচটি চলচ্চিত্র উৎসব, নারী ইন ম্যানি কালারস, ডুয়েমিলা-৩০ (সেমি ফাইনালিস্ট) উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে।

স্বল্পদৈর্ঘ্য এই সিনেমাটির সফলতা নিয়ে তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে কি, জোঁক আসলে এতটা সফলতার দেখা পাবে এটা আমি কখনোই ভাবিনি। দেশে বিদেশে অসংখ্য মানুষ দেখছে, ইনবক্সে, কল করে প্রশংসা করছে। তাছাড়া ডক্টর সেলিনা হোসেনের মতো মানুষ যার লেখার ভক্ত আমি সেও আমাদের জোঁক দেখে পছন্দ করেছেন। কিন্তু আমার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে এই ফিল্মটা দিয়ে মানুষকে সচেতন করা। আমি নিজেকে এবং এই সিনেমাটাকে সব থেকে সফল মনে করব তখনই, যখন আমার এই সিনেমা অন্তত একজন মানুষের বিবেকে কড়াঘাত করবে এবং আরো সচেতন করবে।

সম্প্রতি তিনি ‘আরো কিছু দিন’ নামের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের কাজ শেষ করেছেন। রুদ্রনীল আহমেদের লেখা এই গল্পে অভিনয় করেছেন খাইরুল বাসার এবং পুষ্পিতা পুষ্প। জনপ্রিয় অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সের সঙ্গেও কাজ নিয়ে কথাবার্তা চলছে বলে জানান পার্থ।

নিজের স্বপ্ন নিয়ে তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন একজন ভালো গল্পকার হাওয়া। তার সাথে অবশ্যই একজন ভালো মানুষ হাওয়া। বাইরের ফেস্টিভ্যালগুলোতে দেশের নাম উজ্জ্বল করা। কোনো একদিন কান চলচ্চিত্র উৎসবে আমার ফিল্ম নিয়ে যাওয়া। আজকাল যেহেতু পরিচিতিই আসল হয়ে যাচ্ছে, তাই বলতে পারেন পরিচিত অর্জন করাও একটা স্বপ্ন।

বাংলাদেশি সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সিনেমার ভবিষ্যৎ অনেক উজ্জ্বল। অনেক ভালো নির্মাতা রয়েছে কিন্তু আসলে এদের গাইডলাইন দরকার, দরকার উৎসাহ, দরকার বড়দের পাশে দাঁড়ানো। বাংলাদেশের ফিল্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে তরুণরা অনেক স্বপ্ন দেখে এবং নিজেও দেখি আর সেটা বাস্তবায়নের জন্য আমরা লেগেই আছি। তাই নিঃসন্দেহে বলে দিতে পারি একদিন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের রূপ বদলে যাবে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //